অন্তর্বর্তী সরকার-ইসি’র ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি ঘোট পাকাচ্ছে কারা?


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫, ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ /
অন্তর্বর্তী সরকার-ইসি’র ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি ঘোট পাকাচ্ছে কারা?

প্রখ্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী কবীর সুমনের কালজয়ী গান ‘প্রথমত আমি তোমাকে চাই, দ্বিতীয়ত আমি তোমাকে চাই, তৃতীয়ত আমি তোমাকে চাই, শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই।’ ৫ আগস্ট ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ অর্জনের পর নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশের ১২ কোটি ভোটারের হয়েছে এই গানের দশা। সংস্কার কতটুকু হলো, নতুন দল কারা গঠন করছে, হাসিনার বিচারের অগ্রগতি কতটুকু, বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার প্রস্তুতি কেমন এগুলো নিয়ে জানার আগ্রহের চেয়ে বেশি আগ্রহ ‘নির্বাচন কখন হবে’।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য মানুষ মুখিয়ে রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিলেও দিল্লির তালিকা অনুযায়ী ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভোটের রেজাল্ট পাননি। ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায়নি। এমনকি ২০১২ সালের পর স্থানীয় (সিটি-পৌরসভা-উপজেলা-ইউপি) নির্বাচনগুলোতে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। যাদের বয়স এখন ৩৩ থেকে ৩৫ এবং জেনজির প্রতিনিধি তারাও দেড় যুগ আগে ভোটার হলেও ভোট দিতে পারেননি।

হাসিনা পালানোর পর তাই মানুষ মুখিয়ে রয়েছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বরে নির্বাচনের আভাস দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে তারাও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছে। কিন্তু নির্বাচন বিলম্ব করার অপচেষ্টায় ঘোঁট পাকাচ্ছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার, সংস্কার না করে নির্বাচন নয়, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে ইত্যাদি দাবি তুলে পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে।

শুধু তাই নয়, পতিত হাসিনার আওয়ামী লীগ যাতে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে সে লক্ষ্যে ‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন’ চালুর দাবি জানানো হচ্ছে। অনেকে এটিকে ‘মামা বাড়ির আবদার’ না বলে ‘দিল্লির দাদা বাড়ির আবদার’ হিসেবে অবিহিত করছেন। প্রশ্ন হচ্ছে নির্বাচন ইস্যুতে ঘোঁট পাকানোর নেপথ্যে কারা? বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে কী দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঘোঁট পাকানো হচ্ছে? ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, মাদরাসার শিক্ষার্থী, বিএনপি, জামায়াতসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ। শহীদের তালিকা সে নির্দেশনা দেয়।

তাহলে দেশ যখন নির্বাচনের পথে এগিয়ে চলছে প্রধান উপদেষ্টার ভাষায় ‘নির্বাচনী ট্রেন লাইনে উঠেছে’ তখন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কেন এই সঙ্ঘাত? দিল্লিতে দাদাদের হেফাজতে বসে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা যখন একের পর এক হুঙ্কার দিচ্ছে; তখন সব শক্তির ঐক্যবদ্ধ থেকে ডেভিলদের প্রতিহত করার কথা। সেটির বদলে নিজেদের মধ্যে বিরোধ বাধিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকালও বলেছেন, ‘সংস্কার সংস্কার’ করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না।

২০১৮ সালের রাতের ভোটের কারিগর সাবেক ৫৫ জন ডিসিকে ওএসডি করা হয়েছে। এটি খুশির খবর। প্রশাসনে থাকা হাসিনার অলিগার্কদের ওএসডি, বাধ্যতামূলক অবসর ও চাকরিচ্যুত করার প্রক্রিয়া হয়তো চলবে। ভারতের ষড়যন্ত্রের মধ্যেও ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক মহলকে তার ইমেজ দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে এনেছেন। তারপরও যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় তাই বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আস্থাহীনতায় ভুগছেন।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে নতুন নতুন বিনিয়োগ নিয়ে আসবেন, বার্তা দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারে ফেলে পালিয়েছেন। নতুন সরকারকে সেখান থেকে অর্থনীতিকে সচল করতে হচ্ছে। অপ্রিয় হলেও সত্য, গত ছয় মাসে দেশে বিনিয়োগ বাড়েনি, অর্থনীতির সার্বিক চিত্র চরম বিপদাপন্ন। ইতোমধ্যে কয়েক শ’ গার্মেন্টসহ অনেকগুলো শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো চালু রয়েছে গ্যাস-বিুদ্যতের অভাবে সেগুলোও উৎপাদন কমেছে। প্রবাসীরা রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়ায় ডলার এলেও ব্যাংকগুলোতে এখনো স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ পরিস্থিতি বুঝতে পেরে তিনিও সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের পথে হাঁটতে শুরু করেছেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি জাপানের সরকারি টেলিভিশন এনএইচকে ওয়ার্ল্ডকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘এ বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে নির্বাচন হতে পারে।’ এর আগে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘ভোট কবে হবে তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে কতটা সংস্কার করে নির্বাচনে যাওয়া হবে, তার ওপর। মোটাদাগে ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে হতে পারে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন।’ গতকালও নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আগামী অক্টোবর মাসে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলে ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে।’

নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, সরকার যখনই চাইবে তখনই তারা নির্বাচনের আয়োজন হবে। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে কেন? ‘দিল্লির কৃতদাস হাসিনাকে হাসাতে’ কেন নিজেদের মধ্যে সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ ও রক্তারক্তি? খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায় কুয়েটে ঘটে যাওয়া ছাত্রদলের সাথে ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের ঘটনার বিশ্লেষণ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান।

তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্রশিবির এরা একত্রে ছিল, বিপরীতে ছাত্রদল, তাদের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। একটি বীভৎস ব্যাপার। প্রতিটি দলকেই এই সংঘর্ষের জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ প্রশ্ন হচ্ছে, এই সময়ে কুয়েটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-শিবির বনাম ছাত্রদলের সঙ্ঘাত কেন? সবাই তো মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্যাসিস্টকে হটিয়েছেন। এখন বিরোধ কেন?

তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি এবং পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের লক্ষ্যে তিস্তাপাড়ে সমাবেশ ডেকে বিএনপি সাপ্তাহব্যাপী প্রচারণা চালায়। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমগুলো তিস্তা মহাপ্রকল্প নিয়ে খবর প্রচারে গুরুত্বসহকারে। সে সময় কুয়েটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কী গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি অন্যত্র ফেরানোর চেষ্টা হলো? তিস্তা ইস্যু নিয়ে বিতর্ক, আন্দোলন তো দিল্লির বিপক্ষে যায়। গণমাধ্যমে তিস্তা ইস্যু চাপা দিতে কুয়েট ইস্যু সৃষ্টির কার স্বার্থে? শুধু তাই নয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করে ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল দেন।

১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে হাসিনা ফেসবুকে সোয়া এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন। হাসিনার হরতালের দিন কী কাকতালীয়ভাবে জামায়াত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল? তবে প্রখ্যাত দার্শনিক ড. সলিমুল্লাহ খান ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যতই বাগাডম্বর করুক যেভাবে মুসলিম লীগ বিলুপ্ত হয়েছে, একইভাবে আওয়ামী লীগও একদিন বিলুপ্ত হবে। আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবে না। দলটি রাজনীতি করার নৈতিক বৈধতা হারিয়েছে। বাকশাল গঠনের আগে আওয়ামী লীগ যেমন নিজেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছিল, তেমনি এখন তারা আবার দ্বিতীয়বার আত্মবিলুপ্তির পথে হাঁটছে।’

বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারের লক্ষ্যে ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছে। অতঃপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের আইনি কাঠামো তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।

এর চার দিন আগে ১১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সঙ্গে বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টার। বৈঠক থেকে বের হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারা আশ্বস্ত করেছেন, অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন। জনগণের প্রত্যাশা, অতি দ্রুত একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে, যার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে।’

১১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত এবং তাদের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো ত্রায়োদশ জাতীয় সংসদের প্রস্তুতি এবং তারা কিভাবে সহায়তা করবে তা জানতে চান। বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় ও স্থানীয় দুই নির্বাচন একসঙ্গে করা যায় কি-না, এতে কেমন সময় লাগতে পারে এ বিষয় নিয়ে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’

সব কিছু নির্বাচনের দিকে গড়াচ্ছে। অথচ আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন ইত্যাদি ইস্যু সৃষ্টি করে নির্বাচন বিলম্বে পানি ঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন কিছু সংস্কার করেই নির্বাচনের আয়োজন করা যায়। পুলিশ বাহিনী পুনর্গঠন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নতুন সংবিধান রচনা, আর্থিক খাতের পুনর্বিন্যাস, বিচার বিভাগ সংস্কার, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন, অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডের বিচার এগুলো চলমান প্রক্রিয়া। দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো করা হলে তা টেকসই হবে না। অর্থনীতির মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা দেয়া অপরিহার্য।

তবে অন্তর্বর্তী সরকার এগুলো বিষয়ে প্রস্তাবনা করে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের প্রতিশ্রুতি আদায় করা যেতে পারে। কারণ ওয়ান-ইলেভেন সরকার ১৪০টি সংস্কার প্রস্তাবনা করেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ৪০টি বাস্তবায়ন করলেও ১০০ প্রস্তাবনা ফেলে দিয়েছে। জনগণকে উপেক্ষা করে হাসিনার উন্নয়নের গল্প যেমন টেকসই হয়নি; তেমনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার বাস্তবায়নে নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন হবে।

অতএব সংস্কার ইস্যু নিয়ে সময়ক্ষেপণ না করে জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচনের আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা উচিত। একই সঙ্গে দিল্লির এজেন্ডা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাতে অংশগ্রহণ করে এবং সংসদে যাতে দলটির প্রতিনিধিত্ব থাকে সে লক্ষ্যে সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানোর কূটকৌশল প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। যারা দিল্লির ফাঁদে পা দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং সংস্কারের অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বে ঘোঁট পাকালে তাদের গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে।