

আইসিসি র্যাংকিংয়ে ২ ধাপ পিছিয়ে থাকা আয়ারল্যান্ডকে ২-১ ব্যাবধানে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল টাইগাররা। সিরিজের ১ম ম্যাচে হারের পর ২য় ম্যাচে সিরিজ ধরে রাখার অগ্নিপরীক্ষায় পড়ে লিটন দাসের দল। অতঃপর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়ে আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে করে এক বল বাকি থাকতেই ১১৭ রানে আইরিশদের অলআউট করে দেয় স্বাগতিকরা। জবাবে নেমে ১৩.৪ ওভারে তানজিদ তামিমের ফিফটিতে সহজ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে আগের দুই ম্যাচের মতো এদিনও ভালো শুরু পায় আইরিশরা। ৪ ওভারে ৩৮ রান তুলে প্রথম উইকেট হারায় তারা। টিম টেক্টর ১০ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান করে আউট হন। ষষ্ঠ ওভারে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে ১০ ওভার শেষে ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
ওই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেননি পল স্টার্লিংরা। অধিনায়ক স্টার্লিং দলের পক্ষে সর্বাধিক ২৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। মিডল অর্ডারে ডকরেল ২৩ বলে ১৯ ও ডিলানি ১২ বলে ১০ রান করেন।
ওপেনিংয়ে ব্যাটিংয়ে ফিরে তানজিদ তামিমের সঙ্গে সাইফ হাসান ৪ ওভার শেষে ৩৮ রানের জুটি দেন। সাইফ ১৪ বলে ১৯ রান করে আউট হন। দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। পরে লিটন দাস ৭ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। ৭৩ রানের জুটি গড়ে তানজিদ ও পারভেজ ইমন ম্যাচ বের করে নেন। তানজিদ ৩৬ বলে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তার ব্যাট থেকে চারটি চার ও তিনটি ছক্কা আসে। ইমন ২৬ বলে তিন ছক্কা ও এক চারে ৩৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন।
বল হাতে একাদশে ফিরে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ৩ ওভার করে ১১ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। এছাড়া পেসার শরিফুল ইসলাম ৩ ওভারে ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী ও সাইফউদ্দিন।
বিশ্ব ক্রিকেটে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগের জয়জয়কার অনেক বছর ধরেই। আলো-ঝলকানির খেলা, দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়, বিদেশি বিনিয়োগ, দর্শকদের আগ্রহ- সব মিলিয়ে আইপিএলের পথ ধরে টেস্ট খেলুড়ে প্রায় প্রতিটি দেশেই চালু হয়েছে নিজস্ব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
তবে এত দিন ব্যতিক্রম ছিল নিউজিল্যান্ড। এবার সেই পথ ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জগতে ঢুকছে কিউইরাও। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) মডেলে ২০২৭ সাল থেকে নিজেদের নতুন টি-টোয়েন্টি লিগ চালু করার লক্ষ্য দেশটির।
বর্তমানে একমাত্র নিউ জিল্যান্ডে ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা সুপার স্ম্যাশ। আন্তর্জাতিক তারকা না থাকা আর দর্শক আকর্ষণে ব্যর্থতার কারণে লিগটির গুরুত্ব দিন দিন কমছে। তাই দেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের আভাস দিলেন এনজেড-২০ প্রকল্পের প্রধান ডন ম্যাককিনন।
তার মতে, এখন সময় এসেছে সুপার স্ম্যাশের বাইরে ভাবার। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ভাবনা জানান ম্যাককিনন।
‘আন্তর্জাতিক বাজারে সফল হতে নিউজিল্যান্ডকে নিজস্ব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ তৈরি করতে হবে। যেখানে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) মতো মডেলেই নতুন লিগ পরিচালিত হতে পারে। টুর্নামেন্টের লাইসেন্স থাকবে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের (এনজেসি) কাছে, তবে লিগ পরিচালনা হবে স্বতন্ত্রভাবে।’
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য এখনো সবুজ সংকেত দেয়নি। তবে অনুমোদন মিললে নতুন লিগটি সুপার স্ম্যাশের জায়গা নেবে বলে মনে করছেন ম্যাককিনন।
এর আগে ২০১৪ সালে এনজেসি এ ধরনের একটি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল। তখন বোর্ড মনে করেছিল, আইপিএল বা বিগব্যাশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা কঠিন হবে।
ম্যাককিননের বিশ্বাস, এখন সময় বদলেছে ও নিউজিল্যান্ডের নিজস্ব টি–টোয়েন্টি ব্র্যান্ড তৈরির সুযোগ এসেছে। স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের মতো কিংবদন্তিরাও বেসরকারি মালিকানার লিগের পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানান ম্যাককিনন। খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৭ সালের জানুয়ারিতেই টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে। গত দুই-তিন মাস ধরে বোর্ডের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় আছেন প্রকল্প প্রধান।
তবে নতুন লিগের সবচেয়ে বড় বাধা সময়সূচি নির্ধারণ। যাতে বিগব্যাশ (বিবিএল), আইপিএল, এসএ২০ বা আইএলটি২০ এর সঙ্গে সংঘাত না হয়। কারণ এসব লিগে নিয়মিত খেলেন বহু কিউই ক্রিকেটার।
আপনার মতামত লিখুন :