ইউপি চেয়ারম্যানের ক্ষমতাঃ মৃত ব্যক্তি ‘জীবিত,’ জীবিত হন ‘মৃত’


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ২৩, ২০২২, ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ /
ইউপি চেয়ারম্যানের ক্ষমতাঃ মৃত ব্যক্তি ‘জীবিত,’ জীবিত হন ‘মৃত’

সিরাজদিখান,মুন্সিগঞ্জঃ সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদান, পরিষদের সদস্যদের সম্মানি ভাতার টাকা আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার করাসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, পরিষদের সদস্য ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

জানা যায়, সাইফুল চেয়ারম্যান অর্থের বিনিময় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আপন ভাইকে পিতা, চাচাকে ছেলে, প্রতিবেশীকে স্ত্রী ও ছেলে, জীবিতকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিয়েছেন। বাসাইল গ্রামের বৃন্দাবন মণ্ডল ও কোকারাম মণ্ডল আপন দুই ভাই। অথচ ওয়ারিশ সার্টিফিকেটে বৃন্দাবন মণ্ডলের পিতা দেখানো হয়েছে কোকারাম মণ্ডলকে। একই সনদে বৃন্দাবনের পুত্র ও স্ত্রী যাদের দেখানো হয়েছে তারা কেউই বৃন্দাবনের ছেলে ও স্ত্রী নয়।

আরেক সার্টিফিকেটে যুধিষ্টির মণ্ডলের চাচা বৃন্দাবন মণ্ডলকে ছেলে বানিয়ে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিয়েছেন তিনি। আরেক সার্টিফিকেটে বাসাইল গ্রামের রহিমা বেগম জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে তার ওয়ারিশগণ আদালতে মামলা করেছেন। এ ধরনের ভুয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয় প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৫ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে সাইফুল ইসলামকে সতর্ককতা অবলম্বন ও ভবিষ্যতে এ ধরনের অপকর্ম না করার জন্য লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয় । তার পরও তিনি এ ধরনের কাজ থেকে বিরত হননি।

বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আইউব খান মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত এক অভিযোগে আরো জানান, ২০১৭ সালের জুন মাসের পর থেকে মোট আট জন মেম্বারের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে মাসিক সম্মানি ভাতা দেওয়ার কথা তা পরিশোধ না করে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন। প্রতি মেম্বারের পাওনা প্রায় ৩ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্পের টাকায় মেম্বারদের কাজ করতে হলে সাইফুল চেয়ারম্যানকে ১০% টাকা অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়।

২০২১ সালে বাসাইল গ্রামে এক রাস্তার ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এছাড়াও সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কৃষি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি, অন্যের জমি দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সিরাজদিখান থানা ও মুন্সীগঞ্জ আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে নিউজ করলে কী হবে? পত্রিকা অফিস কি আমার বিচার করতে পারব? সরকারি টাকা আত্মসাৎ করলে তো সরকারই আমাকে ধরত’।