উইম্বলডনে অনন্য এক ইতিহাস গড়লেন আরব-কন্যা ওনস জাবির। চেক প্রজাতন্ত্রের ম্যারি বুজকোভাকে হারিয়ে আসরের সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছেন তিউনিসিয়ার এই তৃতীয় বাছাই টেনিস তারকা। লন্ডনের অল ইংল্যান্ড ক্লাবের কোর্টে কোয়ার্টার ফাইনালে বুজকোভার বিপক্ষে প্রথম সেটে হার দেখেন জাবির।
তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে নেন ৩-৬, ৬-১, ৬-১ গেমে। ছেলে ও মেয়ে মিলিয়ে উন্মুক্ত যুগে আরব দুনিয়া থেকে কোনো গ্র্যান্ড স্লামের সেমিফাইনালে ওঠা প্রথম খেলোয়াড় ওনস জাবির। ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার আমান্ডা কোয়েৎজারের পর আফ্রিকার প্রথম নারী খেলোয়াড় হিসেবে কোনো গ্র্যান্ড স্লামের সেমিফাইনালে ওঠারও নজির গড়লেন জাবির।
মেয়েদের র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় জাবির ফ্রেঞ্চ ওপেনে প্রথম রাউন্ডে হারের পর ঘাসের কোর্টে টানা ১০ ম্যাচ জিতে উইম্বলডনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। সেমিফাইনালে তার প্রতিদ্বন্দ্বী জার্মানির তাতানা মারিয়া। র্যাঙ্কিংয়ে ১০৩তম এই খেলোয়াড় জাবিরের কাছের বন্ধুও। উইম্বলডনে দুজন একসঙ্গে সময় কাটানো ছাড়াও ফুরসত পেলে মারিয়ার দুই সন্তানের দেখাশোনাও করেন জাবির।
তাতানার মুখোমুখি হওয়া প্রসঙ্গে জাবির বলেন, ‘আমি তাতানাকে খুব ভালোবাসি। তার পরিবারকে ভালোবাসি। সে আমার বারবিকিউ বানানোর সঙ্গী। তাকে সেমিফাইনালে দেখে ভালো লাগছে। দুটি সন্তানের মা হয়েও সে সেমিফাইনালে উঠে এসেছে, দারুণ ব্যাপার!’ কীর্তির সামনে বুজকোভাও। সন্তান জন্মদানের পর কোনো খেলোয়াড়ের উইম্বলডন শিরোপা জয়ের ঘটনা নেই দীর্ঘ ৪২ বছর।
সর্বশেষ এমন ঘটনায় ১৯৮০’র উইম্বলডনে শিরোপা জেতেন এক সন্তানের মাতা অস্ট্রেলিয়ান তারকা ইভন গুলাগং কলি। ২০২০ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা জাবির জানালেন, নিজ দেশের মেয়েদের টেনিসে উঠে আসার প্রেরণা জোগাতে চান তিনি। ২৭ বছর বয়সী ওনস জাবির বলেন, ‘আশা করি, আমার পারফরম্যান্স দেখে বাকিরাও উঠে আসার চেষ্টা করবে, আরও ভালো করবে।’
জাবির মজা করে বলেন, বিশ্বের সাবেক ২২ নং তারকা মরক্কোর হিশাম আরাজি, তাকে জেতার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ১৯৯৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত স্থায়ী ক্যারিয়ারে আরাজি নিজে চার চারবার গ্র্যান্ড স্লাম আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে হার দেখেছিলেন। আর বুজকোভার বিপক্ষে জয়ের আগে জাবির গ্র্যান্ড স্লামের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেন দু’বার।
জাবির বলেন, “হিশামের সঙ্গে একটু কথা হয়েছে আমার এবং তিনি আমাকে বলেছেন, ‘আরবরা সবসময় কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যায় এবং এটা আমাদের রোগ। প্লিজ তুমি এটা ভেঙ দাও।’ আমি বলেছিলাম, চেষ্ট করছি বন্ধু।’
জাবির বলেন, খুদে বার্তা আদান প্রদান করেছি আমরা। তিনি বলেছেন, ‘অবশেষে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করায় তোমাকে ধন্যবাদ। এখন সত্যিই তুমি শিরোপাটা জিততে পারো।’
আপনার মতামত লিখুন :