কর্তৃপক্ষের অব্যাবস্থাপনায় বেনাপোলে বাড়ছে যাত্রীদুর্ভোগ


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুলাই ১৪, ২০২২, ১০:৪১ অপরাহ্ণ /
কর্তৃপক্ষের অব্যাবস্থাপনায় বেনাপোলে বাড়ছে যাত্রীদুর্ভোগ
  •  পেট্টাপোল সীমান্তে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার ভোগান্তিতে হাজার হাজার যাত্রী
এম এ রহিম বেনাপোলঃ-আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ভারতের পেট্টাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল। এই স্থল বন্দর দুটি দিয়ে দেশ বিভাগের পর যেমন বেড়েছে বৈধপথে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত তেমনি বেড়েছে আমদানি রফতানি বানিজ্য। হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
শেড ইয়ার্ড আধুনিক কাষ্টম ইমিগ্রেশন ও ডেক্স বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে  জনবলও। তবে বাড়েনি প্রকৃত সেবার মান। হয়রানি অনিয়ম দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি ও অঘোষিত  চুক্তি বানিজ্যে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি রফতানি ও যাত্রীসেবা। আন্তর্জাতিক এই সীমান্তে যাত্রীভোগান্তি চরমে পৌচেছে।
প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত খোলা আকাশের নিচে মেইন সড়কের উপর প্রখর রোদ ও ঝড় বৃস্টিতে ঘন্টারপর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার যাত্রীদের।বন্দর এলাকা ছাড়িয়ে সাদিপুর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পর্যম্ত লাইন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বাড়ছে ঝুকি ও নিরাপত্তাহীনতা। রোদ্রের মধ্যে দাড়িয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে অনেকে। নারী শিশু বৃদ্ধ ও রোগীরা হচ্ছেন ভুলন্ঠিত।
লাঞ্চিত অপমানিত ও হয়রানির স্বিকার। এখানে মানবধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। কতিপয় অসাধু প্রশাসনের সদস্য ও দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে অর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এখানে স্থানীয় প্রশাসনের দুর্বল নজরদারী ও ব্যাবস্থাপনার কারনে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এখানে নেই ভালমানের হোটেল টয়লেট সুপেয় পানির ব্যাবস্থ্যা ফেন ও লাইট।
প্রচন্ড গরমে যাত্রীদুর্ভোগ বেড়েছে বহুগুন। বেনাপোল ও পেট্টাপোল বন্দরে আধুনিক ইমিগ্রেশন ভবন কাস্টমস ও প্যাসেজ্ঞার টার্মিনালে কার্য্যক্রম শুরু হলেও দু পারেই যাত্রীদের রাখা হচ্ছে সীমান্ত এলাকায় সড়কের উপর।  ইমিগ্রেশন ভবনের দক্ষিণ পাশে ও প্যাসেজ্ঞার টার্মিনালের দ্বিতীয় তলায় পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে এসব যাত্রীদের রাখা হচ্ছে সড়কে। বিশেষ কারনেই লাইন বাড়ানোর অভিযোগ স্থানীয়দের।
বাংলাদেশ ও ভারতের সংশ্লিষ্ট দফতরের কোন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনি। বন্দর কাস্টম ও ইমিগ্রেশনে একই স্পটে কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যরা কাজ করায় বিশেষ চুক্তিতে বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ। নামে মাত্র অভিযান পরিচালিত হওয়ায় বেনাপোল পেট্টাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের আনন্দের ভ্রমন যন্ত্রনার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান যাত্রীদুর্ভোগের বিষয়টি কঠিনভাবে পর্যাবেপক্ষন করা হচ্ছে।বিভিন্ন দফতরকে বিষয়টি জানানো হলেও ফল হয়নি দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও সদস্যদের দেশপ্রেম জাগ্রত হলে এভাবে যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হতো না। দু দেশের সরকারের মধ্যে দিনদিন বাড়ছে সোহার্দ ও সম্প্রীতি। ব্যাবসা চিকিৎসা ভ্রমন সহ সব ক্ষেত্রেই সরকারের রয়েছে উদারনীতি।
১০বছর আগে কমজনবল ও ডেক্সসংকটের মধ্যেও এমন পরিস্থির সৃস্টি হয়নি। কারন অনুসন্ধান সহ ব্যাবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট দফতরের আরো আন্তরিক হওয়া দরকার। তা না হলে সরকার বঞ্চিত হবে রাজস্ব আয় ক্ষুন্ন হবে সরকারের ভাবমূর্তি ব্যাবসাসহ অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাবে দুটি দেশ। বাড়বে বাগান পথে অবৈধ যাত্রী যাতায়াত। চোরাচালান সহ সীমান্ত হয়ে পড়বে ঝুকিপূর্ণ। এ দায় কার সরকার জনগন না সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রশ্ন সর্বসাধারনের।
তথ্যানুসন্ধানে জানাজায়.একশ্রেনীর সুবিধাবোগী সদস্যদের কারনে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। পেট্টাপোল ও বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও কাস্টম সদস্যদের রুক্ষ আাচারন অসদাচারন অর্থের দাবীসহ বিভিন্ন কারনে কালক্ষেপ করানো হয়। ভারত অংশে মেডিকেল টেষ্ট ডেক্সে জনবল অনুপস্থিত ফিঙ্গারের নামে সময়ক্ষেপন ও দুর্বলনেটসহ খোশগল্পের কারনেও যাত্রীদুর্ভোগ বাড়ছে।
দু দেশেয় লেগেজ ব্যাবসায়িদের জিম্নি করে চলে   উৎকোচ বানিজ্যের মহাউৎসব। তবে বন্দর ও কাস্টম অভ্যান্তরে অবৈধ দালাল উচ্চেদ হলেও ভিতরে অবৈধ লেনদেন কমেনি। ইমিগ্রেশনে বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও ফল রয়েছে কার্যত পূর্বের অবস্থানে। এদিকে জাল ডলার ও টাকা এবং ভুয়া ট্যাক্সটোকেনেও যাত্রীরা হচ্ছেন লাঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত।
বেনাপোল দিয়ে ভারত গমনে অনিহা বাড়ছে অনেকর। আজাশ ও রেলপথে বেশীটাকা খরচে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন শুশীল সমাজের মানুষেরা। এখানে নেই সিনিয়র সিটিজেন. রোগী ও নারীদের আলাদা বুথ ও অগ্রধিকারের সুবিধা। পাসপোর্ট লেখা. ইমিগ্রেশন সিল ও লাইনের আগে দেওয়ার নাম করে সংঘবদ্ধ চক্র আদার করছে মোটা অংকের অর্থ। এখানে কতিপয় সদস্যদের সহযোগিতার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
ভ্রমন ট্যাক্স ৪৫টাকার স্থলে নেওয়া হচ্ছে ৫০টাকা। এখানে লাখ লাখ টাকা প্রকাশ্যে পকেটস্থ করছে ব্যাংক ও বন্দর সংশ্লিষ্টরা।  আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে কেন সুযোগ সুবিধা বঞ্চিচ হবে দেশ বিদেশের যাত্রীরা। বিস্তর অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদেরও। ভারতের বনগা এলাকার  মোজাম মজুমদার খুলনার সুবোধ নাথ ও ঢাকার আবদার হোসেনসহ দুর্ভোগে পড়া যাত্রীরা বলেন প্রশাসনসহ বহিরাগত দালাল চক্রের খপ্পড়ে বিভিন্ন আবদার মিটাতে অতিষ্ট তারা এ থেকে পরিত্রান চান ভুক্তভোগীরা।
দুর্ভোগে পড়া যাত্রীরা আরে জানান ইমিগ্রেশনে ধীরগতি কর্তৃপক্ষের অব্যাবস্থাপনা. ডেক্স ও জনবল সংকটসহ কতিপয় অসাধু  সদস্যদের কারনে যাত্রীদুর্ভোগ চরমে পৌচেছে। বেনাপোলও পেট্টাপোল সীমান্তে প্রতিনীয়ত ভারত ও বাংলাদেশগামী ৩/৫ হাজার যাত্রী আটকে থাকছে ঘন্টারপর ঘন্টা।অনেক সময় যাত্রীদের করা হচ্ছে ধাওয়া। ভাংচুরের মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে।
গভীর রাতেও প্যাসেজ্ঞার টার্মিনালের সামনে অবস্থান শুয়ে বসে সময় কাটাচ্ছেন অনেক যাত্রী।অনেক সময় সন্ধার আগেই ইমিগ্রেশন প্রবেশপথ বন্ধ করে  যাত্রীদের ফেলা হচ্ছে মহা দুর্ভোগে। প্রতিবাদ করলেই দেখানো হয় ভয়ভীতি।খোলা আকাশের নিচে ও টার্মিনালে শুয়ে বসে রাতদিন কাটান দুর্ভোগে পড়া যাত্রীরা।
 তবে ভারতের পেট্টাপোলে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রেখে যাত্রীসেবার দৃস্টান্ত রাখছেন পুলিশ ও কাস্টম সদস্যরা। বিএসএফের রুক্ষ ব্যাবহারে ক্ষদ্ধ যাত্রী। ইমিগ্রেশন এলাকার এ চিত্রযেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্দর ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানান. ঈদের ছুটি কাটাতে ভ্রমণপ্রিয় মানুষের ঢল নেমেছে.পদ্মাসেতুর কারনে বরিশালের পরিবহন বেনাপোলে আসার আগেই আসছে ঢাকা চিটাগাংয়ের পরিবহন।
করোনা শিথিলের পর চালু হয়েছে বেনাপোল এক্সপ্রেস রেল.এসময়ে দেশের অন্য শুল্কষ্টেশন দিয়ে যাত্রী প্রবেশ ও রয়েছে বন্ধ  ফলে যাত্রী বাড়ছে এ পোর্ট দুটি দিয়ে। কেউ যাচ্ছেন দর্শনীয় স্পটে বেড়াতে, চিকি ৎসা করাতে  আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ঘুরতে বিবাহ ও অনুষ্টানিকতায় অংশনিতে। বেশিরভাগই যাচ্ছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।  ইমিগ্রেশন ও পেসেঞ্জার টার্মিনালে নানান ধরনের  হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।
ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াতে ১৩ টি স্পটে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। দালালের উৎপাতে  বাড়ছে দুর্ভোগ। এসব রুটে যাত্রী পরিবহনেও আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। বংলাদেশ অংশে ২/৪কিলোমিটার লোকাল ভাড়া ৫-১০টাকা হলেও দু পারেই পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে ৪০-৫০টাকা আদায় করা হচ্ছে। আত্নীয় স্বজনদের বাড়ীতে বেড়াতে যাওয়া যাত্রীদেরও ল্যাগেজ ব্যাবসায়ি সাজিয়ে হয়রানি ও অহপতুক ডিএমের জালে জড়ানো হচ্ছে। গড়ে উঠেছে ডিএম সিন্ডিকেট।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  ও পোট থানার (ওসি) কামাল ভুইয়ান বলেন, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী যাতায়াত ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইমিগ্রেশন সহ এলাকায় জনবল বাড়ানো হয়েছে। রোগীদের জন্য অতিরিক্ত চারটি ডেস্ক করা হয়েছে। দালালমুক্ত পরিবেশ করতে আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানান যাত্রীদুর্ভোগ রোধে বিভিন্ন এজেন্সি কাজ করছেন। যাত্রীসেবায়  জায়গা সম্প্রসারন করা হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যেই যাত্রীসেবার নান বাড়বে বলে আশা করেন বন্দর উপ পরিচালক আব্দুল জলিল ও মামুন কবির তরফদার।
তবে দীর্ঘ লাইন ও ভবন ব্যাবহারের বিষয়টি এড়িয়ে যান বন্দর কর্তৃপক্ষ।