চাপ বাড়লে প্রেসিডেন্টের কাছে কিছু ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুলাই ৯, ২০২২, ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ /
চাপ বাড়লে প্রেসিডেন্টের কাছে কিছু ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন

প্রতিবেদক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে। একদিন আগেও নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সহকর্মীদের এটাই জানিয়েছেন। বলেছেন, যতই চাপ আসুক না কেন নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে নয় । আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে মানবজমিন এটা জানতে পেরেছে। সূত্রগুলো বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো ছাড় দেবে না। তবে খুব বেশি চাপ সৃষ্টি হলে প্রধানমন্ত্রীর কিছু ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের কাছে দেয়ার ব্যাপারে শেখ হাসিনা রাজি হলেও হতে পারেন। যদিও ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ভারতের তরফে এ ধরনের একটি পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে শেখ হাসিনা এতে রাজি হননি। যুক্তি দেখানো হয়েছিল নির্বাচন প্রশ্নে সামান্যতম ছাড় দেয়া হলে সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পাবে।

ভারতের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি বলেছিলেন, যেভাবে পশ্চিমা দুনিয়া থেকে চাপ আসছে তাতে কিছুটা হলেও ছাড় দেয়া উচিত। তখনই প্রেসিডেন্টের কাছে কিছু ক্ষমতা দেয়ার প্রশ্নটি আলোচনায় আসে। ২০১৪-এর নির্বাচনে ভারত একতরফা ভূমিকা পালন করেছিল। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এক সকালে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও এ নিয়ে নানা কথা চাউর রয়েছে।

নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব কিছুটা চাপ সৃষ্টি করেছিল। দেশটি ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনাকে দিল্লিতে পাঠিয়েছিল সমঝোতার কোনো সূত্র বের করার জন্য। নির্বাচন বয়কট করেছিল প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য দল। হরতাল আর অবরোধে কাবু হয়ে পড়েছিল গোটা দেশ। প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি প্রশ্নে পর্দার আড়ালে একটা সমঝোতা হয়েছিল। একটি বন্ধু রাষ্ট্রের দূতিয়ালিতে ৬০ থেকে ৭০টি আসন ছাড়ার ব্যাপারে দু’পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এটা কার্যকর হয়নি। নির্বাচনের আগের রাতেই বাক্স বোঝাই হয়ে যায় গায়েবি ভোটে। এবার কী হবে? নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকতেই নানামুখি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সোচ্চার। বৃটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নও অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই অবস্থায় সরকার কি করবে? তারা কি কোনো ছাড় দিতে সম্মত হবে? নাকি চেনাপথে হাঁটবে? ২০১৮ সালের নির্বাচনে যে শক্তি আগ্রাসী ভূমিকা রেখেছিল তারা কি এবার ওয়াকওভার দেবে? এটা অনেকখানি নির্ভর করছে বিরোধী দলগুলোর ওপর।

তারা যদি বিদেশি শক্তির ওপর শতভাগ নির্ভরশীল হয়ে পড়েন তাহলে কাজের কাজ যে কিছুই হবে না- এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা-পরবর্তী পরিস্থিতি সরকারকে বেকায়দায় ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতি সম্প্রতি এ ব্যাপারে তার মতামত তুলে ধরেছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি গোটা দুনিয়াকে বেসামাল করে দিয়েছে। এছাড়া করোনার প্রভাব দেশে দেশে নট ও পটের পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও চাপের মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নিতে পারে- এমনটাই বলাবলি হচ্ছে।