চুয়েটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চুয়েটে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন,


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ১৩, ২০২২, ১০:২৭ অপরাহ্ণ /
চুয়েটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চুয়েটে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন,

নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে বাস ছাড়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় চুয়েটের দুইজন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা হলেন- যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমুল আবেদীন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ সোমবার ক্লাস বর্জন করেন চুয়েটের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে রাম দা হাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ছাত্রলীগের এক সদস্যের ছবি। তবে তিনি কোন বিভাগের শিক্ষার্থী বা চুয়েট ছাত্রলীগের কোন পক্ষের অনুসারী তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, গত শনিবার রাতে নগরে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল গ্রুপের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সীতাকুণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি শেষ হয় সাড়ে ৯টায়। সেখানে গিয়েছিলেন চুয়েট ছাত্রলীগের নওফেল গ্রুপের সদস্যরা। তবে অনুষ্ঠানের কারণে রাত ৯টার বাস নিউমার্কেট থেকে আধঘণ্টা দেরিতে ছাড়ার নির্দেশ দেন তারা।

তখন বাসে ছিলেন সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গ্রুপের সদস্যরা। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফা হাতাহাতি ও মারামারি হয়।

উভয়পক্ষের নেতা-কর্মীসহ চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওইদিন ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা ছাত্রাবাসে ফেরার পর উত্তেজনা বাড়তে থাকে। নাছিরের অনুসারীরা শহীদ তারেক হুদা ও শেখ রাসেল ছাত্রাবাসে থাকেন। অন্যদিকে নওফেলের অনুসারীরা থাকেন ড. কুদরাত-এ-খুদা ছাত্রাবাসে। এ ঘটনার জের ধরে রাতে ড. কুদরাত-এ-খুদা ছাত্রাবাসে অন্তত ১০টি কক্ষের তালা ভাঙেন নাছিরের অনুসারীরা। ফেলে দেন বিছানাপত্র।

এরপর নওফেলের অনুসারীরা গিয়ে শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের একটি কক্ষের তালা ভাঙেন। এরপর রোববার আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। দুই পক্ষই রাম দা, লাঠিসোঁটা ও ইট নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ইট-পাটকেলও ছোড়ে একে অপরকে। এ সময় দুইজন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হন।

চুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক প্রফেসর ড. রেজাউল করিম বলেন, বাস ছাড়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার পর সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে। এ ঘটনায় রোববার বিকেলে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে করণীয় ঠিক করা হবে। আহত দুই শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ছাত্রাবাসে ফিরেছে বলেও জানান তিনি।

সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম ও রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ক্যাম্পাসে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত ২০-২৫ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে চুয়েট ক্যাম্পাস অবস্থিত। চুয়েটে যাওয়া-আসা করতে শনিবার রাত ৯টায় শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাস ছিল।