ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ওষুধ সংকট চরমে


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ৭, ২০২২, ৬:৫০ পূর্বাহ্ণ /
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ওষুধ সংকট চরমে

দ্রুত শেয়ার করুন-

ঝিনাইদহ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপালে পাঁচ মাস ধরে গ্যাসের ওষুধসহ বিভিন্ন প্রকার ওষুধ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই ওষুধ চুরির কারণে রোগীরা ওষুধ না পাওয়াই হাসপাতালের স্টাফদের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বেশকিছু জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সাপ্লাই বন্ধ রয়েছে।

রাষ্ট্র মালিকানাধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) গ্যাস্ট্রিকের পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করতে পারছে না। অনেকেই হাসপাতালের ওষুধ না পেয়ে অর্থের অভাবে কিনতেও পারছেন না। জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ওমিপ্রাজন, প্যান্টোপ্রাজল, এন্টাসিড, ভিটামিন-বি ও ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফরমিনসহ বহু ওষুধ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচুর চাহিদা থাকার পরও তারা দিতে পারছে না।

ঝিনাইদহ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপালের স্টোরকিপার সানোয়ার হোসেন জানান, নতুন যোগদান করেছি। যোগদান করার পর থেকেই দেখছি বেশকিছু ওষুধ ভাণ্ডারে নেই। ইতিমধ্যে আমরা ৫০ হাজার এন্টাসিড, ৩০ হাজার ওমিপ্রাজল ও ৫০ হাজার পেনটোপ্রাজল পেয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা প্রতিটি রোগীই গ্যাসের বড়ি নেয়। ফলে সপ্তাহে দশ থেকে পনের হাজার গ্যাসের বড়ি প্রয়োজন হয়।

ফার্মাসিষ্ট রুহুল আমিন বলেন, ৪/৫ মাস ধরে গ্যাসের কোন ওষুধ ছিল না।

অভিযোগ পাওয়া গেছে বিভিন্ন ক্লিনিকের দালাল, হাসপাতালের স্টাফ ও আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্নি করতে আসা শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন গা্যস্ট্রিকসহ বিভিন্ন আইটেমের ওষুধ কিছু ডাক্তারের সহযোগিতায় স্লিপের মাধ্যমে নিয়ে থাকেন। অনেক সময় ডাক্তাররা স্লিপে লিখলেও ওষুধ কাউন্টারে গেলে বলে এ ওষুধ নাই।

এর আগে হাসপাতালের আশপাশে বেসরকারি ক্লিনিকে কর্মরত ম্যাটস, আইএইচটি ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা চিকিৎসকের স্বাক্ষর জাল করে এন্টিবায়োটিক ওষুধ উত্তোলনের সময় ধরা পড়ে। কিন্তু তাদের কোন শাস্তি দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই চক্রটি এখনো একই ভাবে ওষুধ উত্তোলন করে যাচ্ছে।

ব্যাপারীপাড়ার হতদরিদ্র সবুরা খাতুন নামে এক রোগী বলেন, গত ৫ মাস ধরে তিনি হাসপাতাল থেকে কোনো গ্যাসের বড়ি পাননি। ধারদেনা করে তাকে বড়ি কিনে খেতে হয়েছে। বিষয়টি জানতে আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজাউল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়, কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সিভিল সার্জন ডা. সুপ্রা রানী দেবনাথ জানান, তিনি তো হাসপাতালের দায়িত্বে নেই। তবে যতদুর জানি ওষুধ কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে সব রকমের ওষুধ সাপ্লাই আছে। ক্লিনিকের দালাল, হাসপাতালের স্টাফ ও ইর্ন্টানি করতে আসা শিক্ষার্থীদের দেদারছে ওষুধ দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। এটা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।