পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরু হয়। গতকাল ৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হয়েছে। ট্রেনের টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে ভোগান্তির সেই পুরোনো চিত্র রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। টিকিট নামের সোনার হরিণ পেতে অপেক্ষা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার। অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে চেষ্টা করেছেন অনলাইনে। সেখানেও অভিযোগ বিস্তর।
টিকিট বিক্রির প্রথম দিনেই তিন ঘণ্টার মধ্যে প্রায় সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। এমনই অভিযোগ করেছেন টিকিটপ্রত্যাশরীরা। তারা বলছেন, প্রতি লাইনের প্রথম কিছু লোক টিকিট পেয়েছে। বাকিরা আর পায়নি। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে গেলে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কাউন্টারে দাঁড়িয়েছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।
এদিকে, এবারও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েই বিক্রি করা হচ্ছে ট্রেনের টিকিট। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার জানিয়েছেন, ঈদে টিকিট কালোবাজারি বন্ধে গতবারের মতো এই উদ্যোগ বহাল রাখা হয়েছে। টিকিট কালোবাজারির কোনো সুযোগ নেই। স্টেশন ম্যানেজার বলেন, ট্রেনে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। টিকিটের চেয়ে টিকিটপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি। ফলে সব টিকিটপ্রত্যাশী টিকিট পাবেন না এটিই স্বাভাবিক।
অগ্রিম টিকিট কিনতে গতকাল কমলাপুর রেল স্টেশনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ছবিঃ আব্দুল গনি।অগ্রিম টিকিট কিনতে গতকাল কমলাপুর রেল স্টেশনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। ছবিঃ আব্দুল গনি।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে দেখা যায়, টিকিটপ্রত্যাশীদের বিশাল লম্বা লাইন। ১৬টি টিকিট কাউন্টার থেকে লাইন শুরু হয়ে কাউন্টার করিডোরের বাইরে চলে গেছে এই লাইন। অনেকেই বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মিলছে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের টিকিট।
টিকিটপ্রত্যাশীদের মধ্যে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নারীরা। সাত থেকে আট ঘণ্টা লাইনে দাড়িয়েও টিকিট পাওয়ার নিশ্চয়তা পাননি অনেকে। কোলের শিশু রাফিকে নিয়ে টিকিট কাটতে গতকাল শুক্রবার কমলাপুর স্টেশনে ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের টিকিট কাটতে এসেছেন পূর্ণিমা বেগম। একদিকে দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট, অন্যদিকে ছেলেকে কোলে রাখতে হচ্ছে।
সালেহা বেগম নামে টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, আমি রাত সাড়ে ৪টায় এসেছি। এখানে দেখলাম টিকিটের জন্য নারীদের লাইনে মারামারি হয়েছে। মানুষ লাইন ভেঙে আগে চলে যাচ্ছে। মারামারিতে আমার কাপড়ও ছিঁড়ে গেছে। টিকিটের দেখা পেলামই না।
নারীদের ১৮ নম্বর থেকে টিকিট দেওয়া হলেও ১৯ ও ২০ নম্বর কাউন্টার বন্ধ ছিল। নারীরা বলছেন, ১৯ ও ২০ নম্বর কাউন্টার থেকেও তাদের টিকিট দেওয়া হলে তারা ভোগান্তিতে পরতেন না।
৫ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য রেলওয়ের ই-টিকিটিং ওয়েবসাইটে প্রথম মিনিটে ৫ লাখ হিট করেছে টিকিটপ্রত্যাশীরা। এছাড়া প্রথম তিন ঘণ্টায় সারা দেশে টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি’।
আপনার মতামত লিখুন :