ঢাকার আকাশে মশা খুঁজছে ড্রোন


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুলাই ৩, ২০২২, ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ /
ঢাকার আকাশে মশা খুঁজছে ড্রোন

প্রবাদের মতো মশা মারতে কামান দাগানো হয়নি, বরং মশা খুঁজতে ড্রোনের ব্যবহার শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। মূলত মশার উৎপত্তিস্থল খুঁজতে এ ড্রোন ব্যবহার করছে সংস্থাটি। গতকাল শনিবার গুলশান এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বাড়ির ছাদ, বেলকনি ও পানি জমে থাকে এমন নর্দমার আশপাশে ডিএনসিসির ড্রোন উড়তে দেখা যায়। দূর থেকে যা নিয়ন্ত্রণ করেছেন ডিএনসিসি নিযুক্ত কর্মীরা।

গত বৃহস্পতিবার উত্তরা সেক্টর-৪ এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎস শনাক্তকরণ কার্যক্রমের ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছিলেন, ২ থেকে ১১ জুলাই ঢাকা উত্তরের আওতাধীন প্রতিটি বাসাবাড়ির আশপাশে অত্যাধুনিক ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎস খুঁজতে আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করব।

সিটি করপোরেশন ড্রোন থেকে ছবি এবং তথ্য-উপাত্ত নিয়ে যেসব বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া যায় তার একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করবে, যা আগামী বছরও মশকনিধন কার্যক্রমে কাজে লাগবে। নগরীর প্রতিটি বাড়িতে প্রবেশ করে ছাদ বা বেলকনিতে মশার উৎস খুঁজে বের করা কঠিন এবং এটি অনেক সময়সাপেক্ষ কাজ। তাই অত্যাধুনিক ড্রোন ব্যবহার করে প্রতিটি বাড়ির ছাদে এডিসের লার্ভা আছে কি না, তা খুঁজে বের করা হবে এবং পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেয়রের ঘোষণার আলোকেই গতকাল ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎস শনাক্তকরণ কার্যক্রম শুরু করেছে ডিএনসিসি। ১১ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা উত্তরের আওতাধীন প্রতিটি বাসাবাড়িতে অত্যাধুনিক ড্রোনের মাধ্যমে মশার উৎস খুঁজতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। গতকাল গুলশান ২-এর ৭৪ নম্বর রোডের একটি সুউচ্চ ভবনের ছাদে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমানসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মশক নিধন কর্মীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ড্রোনের মাধ্যমে মশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের মশক নিধন কর্মীদের যদি বলি তোমরা ছাদে উঠে উঠে মশার উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত কর, তা হলে তারা দুই, চার বা সর্বোচ্চ ১০টি বাড়ি দেখবে। আবার অনেক বাড়িতে ঢুকতে দেয় না তাদের। কিন্তু একটি উঁচু ভবনে যখন আমরা উঠে ড্রোন দিয়ে দেখছি, তখন আশপাশের শত শত বাড়ি কিন্তু আমরা এক ঘণ্টার মধ্যে দেখে ফেলতে পারছি।

এতে করে যেমন কাজ সহজ হয়েছে, তেমনি দ্রুততার সঙ্গে মশার উৎপত্তিস্থল কিন্তু আমরা চিহ্নিত করে ফেলছি। সেই সঙ্গে তাৎক্ষণিক সেই ভবনে গিয়ে আমরা মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি। মূলত এ কারণেই মশকনিধন কর্যক্রম বেগবান করতে আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন ড্রোন নিয়ে একেকটি ভবনে যাচ্ছি, আশপাশের শত শত ভবনের ছাদ দেখছি, তখন অন্য ভবন মালিকরাও সচেতন হয়ে যাচ্ছেন। অভিযানে দণ্ডিত যেন তারা না হয়, সে কারণে নিজেরাই তাদের ভবনের ছাদ পরিষ্কার রাখছেন। মূলত এটাই আমাদের দরকার। সবাই সচেতন হলে মশকনিধন, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া থেকে আমরা নগরবাসীকে রক্ষা করতে পারব।