দাবি না মানলে ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ২৩, ২০২৫, ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ /
দাবি না মানলে ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ

মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক দেওয়াসহ কয়েকটি দাবি মানতে সরকারকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। দাবি মানা না হলে ২৮ জানুয়ারি থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির মাধ্যমে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেলস্টেশনে এ কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মজিবুর রহমান।

রেলের রানিং স্টাফ অর্থাৎ ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকরা (টিটিই) জানিয়েছেন, ১৬০ বছর ধরে মাইলেজ অর্থাৎ এক লিটার জ্বালানি তেলে ট্রেন যতদূর যায়, এর ভিত্তিতে বেতনের সঙ্গে ভাতা পেয়ে আসছিলেন তারা। দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন। এ ছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সেই সুবিধা আবার ফেরাতে ইতোমধ্যে তিনদফা কর্মসূচি পালন করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা। বারবার আশ্বাসের পরও সরকার এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। এ পরিস্থিতির জন্য রেল মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকাকে দায়ী করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজনৈতিক কিংবা প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখেন রানিং স্টাফরা। তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসের বন্ধ নেই। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের প্রাপ্যতার পক্ষে থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয় জটিলতা সৃষ্টি করছে।

এ ছাড়া ২০২২ সালের পর নিয়োগপত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না। অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পাবেন, যা রেলওয়ের কোনো আইন বা বিধিবিধানে উল্লেখ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি বিষয়টি এমন নয়। এর আগেও আন্দোলন হয়েছে। ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল কর্মবিরতি পালন করলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। বারবার আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিলেও সংকটের কোনো সমাধান এখন পর্যন্ত হয়নি। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারকে তিনবার সময় দেয়া হয়েছে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। অন্যথায় কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল বারী, সহ-সভাপতি খুরশিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর এ বি এম শফিকুল আলম।