সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা ও নড়াইলে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল। সংগঠনটির নেতাদের অভিযোগ, দেশে পদ্মা সেতুর নাট খুললে মামলা ও শাস্তি হয়, কিন্তু শিক্ষক হত্যা-লাঞ্ছনায় কিছু হয় না।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের নেতারা এসব কথা বলেন।
কর্মসূচি থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মতপ্রকাশের জন্য শিক্ষক হেনস্তা বন্ধ করা, শিক্ষকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও একাডেমিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা এবং বন্যাদুর্গত এলাকার শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফ করার দাবি জানানো হয়।
সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাময়িক বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে ‘সমর্থন জানিয়ে’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নড়াইল সদরের এক কলেজছাত্র পোস্ট দেন। ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা গ্রহণে দেরি করার’ অজুহাতে ১৮ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়।
গত শনিবার দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির এক ছাত্রের ক্রিকেট স্টাম্পের আঘাতে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার গুরুতর আহত হন। পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত সোমবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বলেন, দেশে শিক্ষক নির্যাতন চলছে। একদিকে নির্যাতন, অন্যদিকে চলছে উন্নয়ন তথা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের উৎসব। এই রাষ্ট্রব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের শিক্ষক লাঞ্ছনা ও হত্যা করা শেখাচ্ছে।
ছাত্র কাউন্সিলের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, শিক্ষকদের হত্যা বা লাঞ্ছনা কোনো বিচ্ছিন্ন বা আকস্মিক ঘটনা নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকদের মামলার নামে হয়রানি করা হচ্ছে। সত্য কথা বলা শিক্ষকদের গলায় জুতার মালা পরানো হচ্ছে।
দেশে শিক্ষকদের জন্য রাষ্ট্রের কোনো সুরক্ষা নেই বলে অভিযোগ করেন ফাহিম। তিনি বলেন, ‘আজকে পদ্মা সেতুর নাটের চেয়েও শিক্ষকদের দাম কম। নাট খুললে মামলা হয়, কিন্তু শিক্ষক হত্যা-লাঞ্ছনায় কিছু হয় না।’
আপনার মতামত লিখুন :