পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দেখাতে যশোরে জমকালো আয়োজন ব্যবস্থা


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ১৬, ২০২২, ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ /
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দেখাতে যশোরে জমকালো আয়োজন ব্যবস্থা

যশোরে থাকবে জমকালো আয়োজনযশোরে জমকালো আয়োজনে সম্প্রচার করা হবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। টাউনহল মাঠকে সাক্ষী করা হবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের। ২৫ জুন ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হতে কানায় কানায় ভরে যাবে টাউনহল মাঠ। সন্ধ্যায় আতশবাজির আলোকচ্ছটায় আলোকিত হবে যশোরের আকাশ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপভোগ্য করে সাজানো হবে গোটা অনুষ্ঠান।

এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বুধবার জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সভায়। সভায় বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করতে যার যার মতো করে মতামত প্রদান করেন।

আর মাত্র আটদিন বাকি। ২৫ জুন চালু হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনের আয়োজন করতে যাচ্ছে সরকার। মূল অনুষ্ঠান থাকছে পদ্মার দু’পাড়ে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সেতু এলাকায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৪০ ফুট উচ্চতার দু’টি ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি থাকবে ম্যুরালে। এর পাশেই নির্মাণ করা হচ্ছে উদ্বোধনী ফলক।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করে সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন।

এরপর গাড়িতে চড়ে সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে আরেকটি উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতিমধ্যে সেতু এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেশের সবক’টি জেলায় দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। তারই অংশ হিসেবে যশোরে জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে ১৮টি উপকমিটি গঠন করেছে সেতু বিভাগ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও প্রদর্শনী থাকবে। অতিথিদের দেয়া হবে উপহার ও স্যুভেনির।

মাওয়া ও জাজিরা দু’পাড়েই আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হবে অতিথিদের জন্য। এছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য দু’ পাড়েই একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ওইদিন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে জনসভায় অংশ নেবেন। এটি অবশ্য দলীয় জনসভা। জনসভায় যশোর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যোগ দেবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

পদ্মা সেতু দ্বিতলবিশিষ্ট। ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। ভেতর দিয়ে যাবে ট্রেন। ২৫ জুন যানবাহন চলাচল উদ্বোধন করা হবে। ট্রেন চালু হবে আরও পরে। পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।

দু’প্রান্তের উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১শ’ ৯৩ কোটি টাকা।

২০১৪ সালের শেষ দিকে মূল সেতু ও নদীশাসনের কাজ শুরু হয়। এর আগে ২০১৩ সালের দিকে শুরু হয় সংযোগ সড়ক, টোলপ্লাজা নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ।

ঐতিহাসিক পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে সারাদেশের সাথে সরাসরি যুক্ত করবে। এ সেতুর মাধ্যমে মোংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সাথে রাজধানী ঢাকা এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দ্বার উন্মোচন হবে যশোরাঞ্চলেরও। এ কারণে যশোরের আয়োজনও হবে সেইভাবে। যশোরের অনুষ্ঠান যাতে ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকে এজন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান তেমন কথাই জানিয়েছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার দেখতে টাউনহল মাঠে স্থাপন করা হবে এলইডি স্ক্রিন। সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে টাউনহল মাঠ যাতে কানায় কানায় পূর্ণ হয় সেই চেষ্টা করা হবে। পৌরসভাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুরো টাউনহল মাঠকে লাইটিং করার জন্য।

এদিন সারাদিন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। সন্ধ্যার পরে হবে আতশবাজির উৎসব। জেলা পরিষদকে এই আয়োজনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ আনন্দ র‌্যালি করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে যাতে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। উদ্বোধনের দিন কাছাকাছি এলে এই অভিযান আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছেন সভায় উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফিরোজ কবির।

সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাতে নতুনত্ব থাকে সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।