বাংলাদেশে চলমান বন্যার কারণে ১৬ লাখ শিশুর জরুরি সাহায্য প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ।সোমবার (২০ জুন) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই বন্যায় শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে এবং জরুরি পানি ও ওষুধ সরবরাহ করছে। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এ প্রসঙ্গে বলেন, এখানকার শিশুদের এখন নিরাপদ খাবার পানি প্রয়োজন।
তা না হলে পানিবাহিত ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। ইউনিসেফ এরইমধ্যে ৪ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করেছে। এর মাধ্যমে ৮০ হাজারের বেশি বন্যা আক্রান্ত পরিবারের এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত হবে।
দ্য স্ট্রেইট টাইমসের বরাত দিয়ে ইউনিসেফ জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বন্যা দুর্গতদের সাহায্যে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে সাহায্য করতে আরও কয়েক মিলিয়ন পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করবে তারা। এছাড়া ১০ হাজারের বেশি পানির কন্টেইনার এবং নারীদের জন্য কয়েক হাজার ‘হাইজিন কিট’ সরবরাহ করবে। জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুবিধা বৃদ্ধিতে জরুরি ওষুধ সরবরাহের কথাও জানিয়েছে ইউনিসেফ।
সংস্থাটি জানিয়েছে, সিলেট বিভাগের ৯০ শতাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রই প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগ। এছাড়া শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ডুবে যাওয়া।
এই বন্যার কারণে ৩৬ হাজারের বেশি শিশুকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। ওই অঞ্চলের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এমনিতেই দীর্ঘ ১৮ মাস কোভিড মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শিশুদের শিক্ষাজীবন। এখন বন্যার কারণে সেই ক্ষতি আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত বন্যায় অন্তত ৮ শিশু প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। এ নিয়ে ইয়েট বলেন, যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে তাদের জন্য আমাদের হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত। এই দুর্যোগে সবথেকে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। তাই তাদের যা দরকার তা নিশ্চিতে সরকার ও সহযোগী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ।
উল্লেখ্য, বন্যায় আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে সংস্থাটি জরুরি ২৫ লাখ ডলার তহবিল চেয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :