বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানঃ ভ্যানগাড়িতে ছুটছেন বই নিয়ে দেশ গড়ার লক্ষ্যে


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুলাই ১৫, ২০২২, ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ /
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানঃ ভ্যানগাড়িতে ছুটছেন বই নিয়ে দেশ গড়ার লক্ষ্যে

বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীকে বিতাড়িত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিনিয়ে এনেছেন। ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা কখনও তাদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেননি। এমনই একজন নিঃস্বার্থ মুক্তিযোদ্ধা এনছান আলী খান। অকৃত্রিম বিবেকবোধ দেশের প্রতি গভির ভালোবাসার টানে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।

মুক্তিযুদ্ধা এনছান আলী খান ১৯৩৬ সনে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বিহারি পুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল গনি খান ছিলেন একজন কৃষক। ৬ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ইনছান আলী খান ৪র্থ সন্তান।

বাবার অভাবী সংসারে অতি কষ্ট করে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কাফিলা হাই স্কুলে লেখাপড়া করেন তিনি। ১৯৭১ এর রণাঙ্গনে ৩৫ বছরের আত্মত্যাগ মুক্তিকামী সৈনিক ২ নম্বর সেক্টরে ক্যাপ্টেন হায়দার আলীর নেতৃত্বে সোনারগাঁও, কাচপুর, মুরাপাড়া,আদমজী জুটমিল সংলগ্ন এলাকায় দায়িত্ব পালন করেছেন।

ঢাকা সারদা পুলিশ লাইনে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশরক্ষায় জীবনকে তুচ্ছ করে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। যুদ্ধের মাঠে লড়াই এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আহার-নিদ্রা কি জিনিস ভুলেই গেছিলাম।

চোখের জলে বলেন স্বপ্ন একটাই ছিল মাতৃভূমি মানেই মা জীবন দিয়ে হলেও তাকে বাঁচাতে হবে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অসংখ্যবার মৃত্যুর দুয়ারে গিয়েও যুদ্ধ করে বেঁচে রয়েছি। এখনো মনে পড়লে ঘুম আসে না।

কাঁচপুর ব্রিজের উপর পাকিস্তানি মিলিটারির সাথে অনেকক্ষণ গোলাগুলি হয় চারপাশ দিয়ে আমাকে ঘিরে রাখে অস্ত্র কাঁধে নিয়ে বাধ্য হয়ে ঝাঁপ দেই নদীতে। অসংখ্য মৃতদেহ ভাসতে থাকে নদীতে একটি মৃতদেহ জড়িয়ে ধরে নদীর কিনারায় গিয়ে উঠি।

যুদ্ধশেষে স্বাধীনতা লাভের পরে অর্ধাহারে-অনাহারে কেটেছে কয়েক যুগ। বর্তমানে বই বিক্রেতার পেশাকে পাথেয় করে এক সন্তানের পিতা দরিদ্রতার সাথে সংসার চালনা করছেন। আজ জীবনের এই ক্রান্তিলগ্নে ৮৬ বছর বয়সেও স্বপ্ন দেখে আগামী দিনগুলোর।