

উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় তাজমহল পার্কিং লটের কাছে একজন প্রবীণ মুসলিম ক্যাব চালককে হেনস্থা করেছে একদল উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদী জনতা। এ সময় তাকে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়। ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, স্লোগান দিতে অস্বীকার করলে তাকে হুমকি দেওয়া হয় এবং এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
তাজমহল পার্কিং এলাকার কাছে রেকর্ড করা ভিডিওটিতে দেখা যায়, একজন যুবক মোহাম্মদ রইসকে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে বলছে। রইস তাতে রাজি হননি। এরপর ওই যুবক রইসকে হুমকি দেয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে রইসকে এই স্লোগান দিতে বাধ্য করা হবে, এমন ক্যাপশন দিয়ে ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে।
হেনস্থাকারী এক যুবককে রোহিত ধর্মেন্দ্র প্রতাপ সিং হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাজমহলের পার্কিং এলাকার কাছে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দৃশ্যত বিচলিত ওই চালককে বারবার চাপ দেওয়া হচ্ছে এবং যুবকটি তাকে সতর্ক করে বলছে, তাকে তিন দিনের মধ্যে এটি বলতে হবে। ‘আসল সন্ত্রাসী’ ক্যাপশন দেওয়া ক্লিপটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
এই ঘটনার সময়টি অযোধ্যায় নবনির্মিত রাম মন্দিরে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভক্তদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন, ঠিক সেই সময়ে আগ্রায় একজন বয়স্ক মুসলিম ব্যক্তিকে একই দেবতার নামে ভয় দেখানো হলো।
এদিকে, মধ্যপ্রদেশের রায়সেন জেলার পানজরা গ্রামে ছয় বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত একজন স্থানীয় শ্রমিক বলে জানা গেছে। সে শিশুটিকে চকলেট দিয়ে প্রলুব্ধ করে জঙ্গলে নিয়ে এই জঘন্য কাজ করার পর পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় চিকলোদ, গৌহরগঞ্জ, ওবায়দুল্লাগঞ্জ, মান্দিদীপ এবং রায়সেনের বাসিন্দারা ন্যাশনাল হাইওয়ে-৪৫ অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়ে।
মুসলিম সম্প্রদায় বিচার চাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে এবং অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে। নেতারা জোর দিয়ে বলেছেন, শিশুদের সুরক্ষা সাম্প্রদায়িক সীমানা অতিক্রম করে। কংগ্রেসের প্রতিনিধিরাও বিক্ষোভে যোগ দিয়ে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দ্রুত আইনি পদক্ষেপের দাবি জানান।
দুটি ঘটনাই ভারতে সংখ্যালঘু ও নারীদের অব্যাহত দুর্বলতা এবং সুরক্ষার জন্য জরুরি প্রয়োজনকে তুলে ধরেছে। সুশীল সমাজ নেতা, মানবাধিকার কর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা এই গর্হিত কাজের নিন্দা জানিয়েছেন এবং আরও ভয় দেখানো, হয়রানি এবং সহিংসতা রোধে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ, সময়মতো বিচার এবং সামাজিক জবাবদিহিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :