ভারতে কঠিন চাপের মুখে পড়েছে আওয়ামীলীগ


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুলাই ২৬, ২০২৫, ২:৩৪ অপরাহ্ণ /
ভারতে কঠিন চাপের মুখে পড়েছে আওয়ামীলীগ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পালিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন মাফিয়ানেত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই সে দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের খুনিদের পক্ষ নেন। কিন্তু সে দেশের জনগণ ১৪’শ মানুষকে খুন করে পালানো শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেয়ার বিরুদ্ধে। ভারতের সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন জাতিসংঘের তদন্তে ধরাপড়া মানবাধিকার লংঘনকারী শেখ হাসিনাকে কেন আশ্রয় দেয়া হয়েছে? পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয় দেয়ায় নরেন্দ্র মোদীর কঠোর সমালোচনা করেছেন।

ভারতের সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের নেতা ও শেখ হাসিনা যেন ভারত থেকে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে না পারেন সে ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে। ফলে গোপালগঞ্জ ইস্যু নিয়ে আওয়ামী লীগ দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করলেও তা করতে দেয়া হয়নি। হিন্দুস্তান টাইমসসহ ভারতের গণমাধ্যমগুলো বলছে, শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেন কোনো বক্তব্য না দিতে পারেন, সে বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান করে তা করতে না পারার মাধ্যমে দিল্লি বার্তা দিয়েছে সে দেশেও আওয়ামী লীগের যায়গা হচ্ছে না। বিজেপি সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বেশ চাপের মুখে পড়ে গেছে পলাতক আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব।বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড

জানা যায়, নয়াদিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছিলেন আওয়ামী লীগের পলাতক শীর্ষ নেতা ও বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রীরা। কিন্তু প্রস্তুতির চূড়ান্ত মুহূর্তে ভারত সরকার সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে সায় দেয়নি। ফলে ভিন্ন নামে আহূত সংবাদ ব্রিফিংটি বাতিল করতে হয়। যদিও আয়োজকদের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়া সাংবাদিকদের ‘এটা আপাতত স্থগিত’ জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়।

এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে গণহত্যা’ চলছে এমন অভিযোগ তুলে শেখ হাসিনার নির্দেশে বুধবার দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রীরা। তবে অনুষ্ঠানের ঠিক আগমুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে- বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (বিএইচআরডব্লিউ) নামে একটি অস্তিত্বহীন সংগঠনের ব্যানারে ওই সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়েছিল।

গত বুধবার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় এটি হওয়ার কথা ছিল। এর আয়োজক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, যিনি নিজেকে ওই সংগঠনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার মহাসচিব হিসেবে দাবি করেন। আয়োজকরা জানিয়েছিলেন, সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও মন্ত্রীদের’ গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ‘সহিংসতা’ এবং দেশের ‘গণহত্যা’র প্রসঙ্গে বক্তব্য দিবেন। তবে সাংবাদিকরা সম্মেলনস্থলে জড়ো হওয়ার পর মিস্টার সিদ্দিকী এক বিবৃতিতে জানান, ‘ঢাকার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের সম্মানে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় ৩৫ জনের বেশি মানুষ, যাদের বেশির ভাগই শিশু প্রাণ হারান এবং প্রায় ১৭০ জন আহত হন।’বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড

জানা গেছে, গত কয়েকদিনে ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাসান মাহমুদ ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দিল্লি সফর করেছেন। তারা চেষ্টা করেও শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারেননি। আওয়ামী লীগের ওই সাবেক মন্ত্রীদের এই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা ছিল। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, এই গভীর শোকাবহ পরিস্থিতিতে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এদিকে দিল্লিতে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, এই সম্মেলন নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনানুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানিয়েছিল। বিশেষ করে, আগামী ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশের মাটিতে এমন একটি বিতর্কিত অনুষ্ঠান প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।বাংলাদেশ ভ্রমণ গাইড

উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস নামক সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলী সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত।