যশোরে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার


Al Amin প্রকাশের সময় : আগস্ট ৯, ২০২৪, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ /
যশোরে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার

যশোর প্রতিনিধি: যশোরে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বিপিএম(বার)পিপিএম। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে তিনি তাদের এই আশ্বাস প্রদান করেন। (৮ আগস্ট) বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জানান, তারা ব্যবসা ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বর্তমানে চুরি এবং ছিনতাইরোধে তারাই কর্মী দিয়ে রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পাহারা দিচ্ছেন। কিন্তু এটা পুলিশের কাজ। তারা ব্যবসায়ী মানুষ। এটা তাদের কাজ নয়। অভিযোগ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে দুর্বৃত্তদের চাঁদাবাজির শিকার হয়ে আসছেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ। রয়েছে চাঁদাবাজির তারা এখন এ ধরনের পুলিশ দেখতে চান না। তারা চাঁদাবাজির হাত থেকে রেহাই পেতে চান। ব্যবসায়ীরা যাতে চাঁদাবাজি মুক্ত পরিবেশে ব্যবসা করতে পারেন সেই ব্যাপারে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতৃবৃন্দ।

কিশোর গ্যাং সম্পর্কে অভিযোগ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, যশোরের একটা বড় সমস্যা কিশোর গ্যাং। তাদের কাছে ছুরি-চাকু থাকে। তাদের হাতে লোকজন প্রতিনিয়ত ছুরিকাহত হচ্ছেন। এই কিশোর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানান।

গাড়িখানা রোডের পুলিশের মেলার বিষয়ে নেতৃবৃন্দ পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করে বলেন, এটা কোন ধরনের মেলা? মেলা বলতে সেখানে নতুন কিছু থাকবে। মেলা থাকে স্বল্প সময়ের জন্য। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এখানে মেলার নামে কী বিক্রি হচ্ছে? পুলিশের এই মেলার কারণে যশোরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বৈঠকে পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম ধৈর্য্য সহকারে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের কথা শোনেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে পুলিশ কাজ করবে। চাঁদাবাজি বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোনো পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আগের মত আর ঘটনা ঘটবে না। তিনি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, আপনারাও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করবেন। পুলিশ আপনাদের পাশে আছে।

পুলিশ সুপার কিশোর গ্যাং এবং চাকু বিক্রি প্রসঙ্গে বলেন, কিশোর সন্ত্রাসীদের পরিবারকে আপনারা বয়কট করুন। সন্ত্রাসীদেরকে কেউ আশ্রয় দেবেন না। পুলিশ এই কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই কাজ করে যাবে। তাদের হাতে যাতে চাকু না যায় সেই জন্য পুলিশ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলবে। ছুরি-চাকু বিক্রির সাথে জড়িত ব্যবসায়ীদেরকে রেজিস্ট্রার খাতা করতে বলবেন। যারা ছুরি- চাকু ক্রয় করতে আসবেন তাদের কাছ থেকে অবশই এনআইডি’র ফটোকপি নিতে হবে। এনআইডি’র ফটোকপি ছাড়া কারোর কাছে ছুরি-চাকু বিক্রি করা যাবে না। বিক্রির পর ক্রেতার নাম ঠিকানা রেজিস্ট্রার খাতায় লিখে রাখতে হবে ব্যবসায়ীদের। পুলিশ নিয়মিত এই রেজিস্ট্রার খাতা দেখবে।

পুলিশ মেলা সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, এটা তো রাতারাতি ওঠানো সম্ভব হবে না। তবে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন।

এছাড়া বৈঠকে যশোরে জাবীর ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ২৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম।

বৈঠকে চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হোসেন টুকুন, দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তানভীরুল ইসলাম সোহান, রকিবুল ইসলাম চৌধুরী সঞ্জয়, শাহিনুর হোসেন ঠান্ডু, সুফিয়া মাহমুদ রেখা, রাজা হোসেন রাজা, যশোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ রাশেদ আব্বাস রাজ, কাসেদুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।