শয়তান ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় ৩ সাংবাদিকসহ গাজায় নিহত ১২


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : মার্চ ১৬, ২০২৫, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ /
শয়তান ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় ৩ সাংবাদিকসহ গাজায় নিহত ১২

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিরতির চুক্তি থাকা সত্ত্বেও, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। এই হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন সাংবাদিক ও কয়েকজন সহায়তা কর্মী রয়েছেন। এসব হামলা এবং যুদ্ধের চলমান পরিস্থিতি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।

হামলাগুলোর বেশিরভাগই ইসরায়েলি ড্রোন হামলা। গাজার উত্তর বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নয়জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই মানবিক সহায়তা কর্মী। একই দিন জুহোর আদ-ডিক শহরে আরও দুটি ড্রোন হামলায় দুটি নিহতের ঘটে। হামলার ফলে আরও এক ফিলিস্তিনি শিশুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এই হামলার পেছনে ইসরায়েলের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের লক্ষ্য ছিল মানবিক ত্রাণ কর্মসূচি ও সহায়তা কার্যক্রমে নিয়োজিত ব্যক্তিদের। নিহত সাংবাদিকরা গাজায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক ত্রাণ কাজ নথিভুক্ত করছিলেন, যা তাদের কাজের অংশ ছিল। ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার জন্যই ইসরায়েলি বাহিনী সাংবাদিকদের টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এই হামলার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলি এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

গাজার দক্ষিণ অংশেও হামলা অব্যাহত ছিল। রাফাহ শহরের পশ্চিমে তাল আস-সুলতান এলাকায় এক ফিলিস্তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, রাফাহ শহরের নিকটবর্তী আল-শাকুশ এলাকায় ড্রোন বোমা হামলায় আরও আটজন আহত হন। এসব হামলায় অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও, ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় প্রতিদিন গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে, বিশেষ করে জানুয়ারির ১৯ তারিখে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর থেকে হামলাগুলি আরও বৃদ্ধি পায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলি দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরেও, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় প্রায় ১৫০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

ফিলিস্তিনী গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গাজার উত্তর বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় তিনজন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে নয়জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই মানবিক ত্রাণ কর্মী, যাদের কাজ ছিল গাজার অবস্থানরত মানুষদের সহায়তা প্রদান করা। এদের মধ্যে তিনজন স্থানীয় সাংবাদিক ছিলেন, যারা ত্রাণ কার্যক্রমের নানা পরিস্থিতি ক্যামেরায় ধারণ করছিলেন। তারা ত্রাণ কর্মীদের সহায়তায় কাজ করছিলেন এবং এই হামলা তাদের ওপর আরও নির্যাতনমূলক আক্রমণ।

এই হামলার পর, ফিলিস্তিনের সাংবাদিক এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা ইসরায়েলি সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, যাতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়িত হয়। এই হামলাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে, এবং ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান উত্তেজনার একটি ভয়াবহ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি এবং স্থায়ী শান্তির পথ তৈরি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকবে, তবে ইসরায়েলি সরকারের শক্ত অবস্থান তা সম্ভব করতে বাধা সৃষ্টি করছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা