শাপলা চত্বরে আওয়ামীলীগ সরকারের গণহত্যা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : মে ৫, ২০২৫, ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ /
শাপলা চত্বরে আওয়ামীলীগ সরকারের গণহত্যা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত

হেফাজতের সমাবেশে লাশের সারি (ইনসেটে) পুলিশের গুলি-ফাইল ফটো

  • ১৩ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ শেষে সারা দেশের আলেম-ওলামা শাপলা চত্বরে অবস্থান নিলে রাতের অন্ধকারে ’৭১ সালের ২৫ মার্চের আদলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে গুলি ও পিটিয়ে খুন করা হয় অগণিত আলেম-ওলামা ও মাদরাসা ছাত্রকে।

আজ সেই ঘটনাবহুল ৫ মে। ২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে ঢাকার ঐতিহাসিক শাপলা চত্বর তৎকালীন আওয়ামী নেতৃত্বাধীন সরকারের নির্মমতার এক নজির সৃষ্টি হয়। ১৩ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ শেষে সারা দেশের আলেম-ওলামা শাপলা চত্বরে অবস্থান নিলে রাতের অন্ধকারে ’৭১ সালের ২৫ মার্চের আদলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে গুলি ও পিটিয়ে খুন করা হয় অগণিত আলেম-ওলামা ও মাদরাসা ছাত্রকে।

এ হত্যাযজ্ঞে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগ দেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। রক্তে ভেসে যায় মতিঝিল চত্বর ও এর আশপাশের বিভিন্ন অলিগলি। এর প্রতিবাদে পরদিন নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আলেমরা বিক্ষোভ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আরো ৩৪ জন নিহত হন। এ ঘটনার একযুগ পরও খুনি ও খুনের নির্দেশদাতাদের বিচার হয়নি। গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর নবগঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত বছরের ২৬ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে হেফাজতে ইসলাম।

২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়। এর প্রতিবাদে কাদের মোল্লার ফাঁসি দেয়ার দাবিতে শাহবাগে গণসমাবেশ করে বামপন্থীরা। দফায় দফায় বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকে এ গণজাগরণ মঞ্চ নামে এ সমাবেশ।

এ সমাবেশ থেকে কাদের মোল্লার ফাঁসি চাওয়া ছাড়াও ইসলাম নিয়ে নানা ধরনের কটূক্তি করা হয়। এ ছাড়া গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন সময় ব্লগে লেখা ইসলামবিরোধী লেখা প্রকাশ পায়। এর প্রতিবাদে সারা দেশে ইসলামপন্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এর প্রতিবাদে ও ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভের ডাক দেয়। রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন শহরে কয়েকদফা বিক্ষোভের পর ৫ মে ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি দেয় হেফাজতে ইসলাম।

ঢাকায় প্রবেশ মুখগুলোতে অবস্থান নেন আলেম-ওলামারা। কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও যুবলীগ-ছাত্রলীগ হামলা চালালে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। পরে শাপলা চত্বরে অবস্থানের ঘোষণা দেয় হেফাজত। সে অনুসারে লক্ষাধিক আলেম-ওলামা ও মাদরাসা ছাত্ররা শাপলা চত্বরে জড়ো হন। এ নিয়ে সারা দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে হেফাজতের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। বিভিন্ন স্থানে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশের গুলিতে আহতদের অনেককে দিনেই বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসব ঘটনার প্রতিবাদে হেফাজত নেতারা রাতেও শাপলা চত্বরে অবস্থান অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এ দিন নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটতে থাকে।

হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে সরকার জোরপূর্বক ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে হাটহাজারিতে পাঠিয়ে দেয়। তবে হেফাজত নেতাকর্মীরা শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়ার ব্যাপারে অনড় থাকেন। ওই দিন রাত ১১টার দিকে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর গভীর রাতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ-র‌্যাব, বিজিবি ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হেফাজতের নেতাকর্মীদের মাঠছাড়া করতে চার দিক থেকে ঘিরে মুহুর্মুহু গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে গণহত্যা চালায়।

এ সময় গুলিতে বহু নেতাকর্মী আহত ও নিহত হন। অনেককে লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হয়। বিভিন্ন অলিগলিতে হেফাজত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গুলি করা হয়। লাশ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে নিয়ে গুম করা হয়। পরের দিন সকালে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা বিক্ষোভ করে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে ২৭ জন নিহত হন। এ ছাড়া হাটহাজারী উপজেলায়, পুলিশের গুলিতে ছয়জন নিহত হন, বাগেরহাটে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে একজন হেফাজত সদস্য নিহত হন।

হেফাজতের ওপর ক্রাকডাউনের ওই ঘটনা লাইভ দেখানোর কারণে সরকার জোরপূর্বক দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবার থানায় মামলা করতে গেলে তা নেয়া হয়নি। এসব ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪৯টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে রমনা বিভাগে ৫টি, মতিঝিলে ২৬টি, ওয়ারীতে ৩টি, ডিবির মতিঝিল বিভাগে ১২টি, ডিবির লালবাগ বিভাগে ২টি ও ডিবির ওয়ারী বিভাগে ১টি।

রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় হেফাজত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আরো অন্তত ৩০টি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২০ সালে হেফাজতের বিরুদ্ধে রাজধানীতে ৪টি ও ২০২১ সালে ১৩টি মামলা হয়েছে। সব মিলিয়ে ঢাকায় হেফাজতের মামলার সংখ্যা ৬৬টি। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন হাজার ৪১৬ জনের নামে এবং ৮৪ হাজার ৭৯৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল।

আসামিদের মধ্যে হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, যুবদল, নেজামে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। এ মামলায় হেফাজতের তৎকালীন মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার করে নির্মম নির্যাতন করা হয়। এ ছাড়া হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, জুনায়েদ আল হাবীব, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সাখাওয়াত হোসাইন রাজীসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।

হেফাজতের সমাবেশ ঘিরে কতজন নিহত হয়েছে তা নিয়ে আজো ধোঁয়াশা কাটেনি। ওই সময় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দুই থেকে তিন হাজার আলেম-ওলামা মাদরাসা ছাত্র নিহত হওয়ার অভিযোগ করা হয়। হেফাজতও জানায় তাদের সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেককে বেওয়ারিশ হিসেবে কবর দেয়া হয়েছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।

হেফাজত নেতারা জানান, ওই সময় পরিস্থিতি এতটাই ভয়ের ছিল যে, কে কোথায় মারা গেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান গ্রহণ করাও সম্ভব হয়নি। তবে সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা জানানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, হেফাজতের সাথে সংঘর্ষে রাজধানীতে একজন পুলিশ সদস্যসহ ১৩ জন নিহত হন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার শাপলা চত্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশে নিহত হওয়া ৬১ জন ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায় নিহতের সংখ্যা ৫০ এর অধিক।

এ দিকে এ ঘটনায় হাসিনা সরকার উৎখাতের পর গত বছরের ২৬ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে হেফাজতে ইসলাম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ অভিযোগ করেন।

এর আগে মুফতি হারুন ইজহারের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে আরেকটি অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক এমপি হাজী সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নির্মূল কমিটির সদস্য অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার, একাত্তর টিভির সাবেক সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের, এবিনিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক সুভাস সিংহ রায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এবং এনএসআইয়ের মো: মনজুর আহমেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল এ অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে বর্তমানে তদন্তে নেমেছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া ওই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবুল সরদার চাখারী ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাকি আল ফারাবীর আদালতে গত বছরের ১৮ আগস্ট মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

ওই মামলায় গত ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার ও বেনজীর আহমদ এবং গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান এইচ সরকার।

এ মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, মতিঝিল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক, মতিঝিল ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনসুর আহমেদ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা ইমরান, সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ সাঈদ, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফারজানা আক্তার, সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ আক্তার, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আনিসুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন, মতিঝিল জোনের সাবেক উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম, হামদর্দ গ্রুপের পরিচালক মেজর (অব:) ইকবাল, মতিঝিল জোনের সাবেক উপকমিশনার আশরাফুজ্জামান, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব:) জিয়াউল আহসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং মো: শাহাদাত হোসেন, মো: এমদাদুল হক ও শেখ শাহ আলম তালুকদার।

এ দিকে হাসিনা সরকারের পতনের পর হেফাজত নেতাদের নামে মামলা প্রত্যাহারের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আইন উপদেষ্টার কাছে আবেদন জানায় হেফাজতে ইসলাম। তবে এখনো সেসব মামলা প্রত্যহার করা হয়নি। গত ৩ মে মামলা প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে মহাসমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম।

এ বিষয়ে হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী নয়া দিগন্তকে বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে রাতের অন্ধকারে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকার ঘুমন্ত ও নামাজরত আলেম-ওলামা ও মাদরাসা ছাত্রদের ওপর ইতিহাসের নির্মম গণহত্যা চালিয়েছিল। নিরীহ মানুষদের ওপর হাজার হাজার গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। অবশেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সেই ফ্যাসিবাদকে বিদায় নিতে হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় হেফাজতের করা মামলার দ্রুত অগ্রগতি ও বিচার দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৮৪ জন মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে। কিন্তু এরপরও হেফাজত নেতাদের নামের মামলা প্রত্যাহার না করা দুঃখজনক। সরকার যদি আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধের মামলা প্রত্যাহার না করে তাহলে তাদের খেসারত দিতে হতে পারে।