গুজব ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় মরিয়া ফ্যাসিস্ট সজীব ওয়াজেদ জয়। প্রোপাগান্ডার উপর ভারত থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই হাসিনাপুত্র খুনি মায়ের পতনের পর এ পর্যন্ত ডজেনের অধিক গুজব ছড়িয়ে পোস্ট মুছে ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এজন্য তাকে 'অপতথ্যের জনক' আখ্যা দিয়েছেন নেটিজেনরা।
কোনো আবিষ্কার ছাড়াই 'সাড়ে হাজার বিজ্ঞানী' খ্যাত জয় বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ফেসবুক পোস্টে দাবি করে, নেত্রকোনা-৩ আসনের সাবেক এমপি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদারকে পিন্টুকে জেলখানায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ইফতিকারের নাম যেমন জয় ভুল লেখেছে, তার কারাবাসের দাবিও ছিল ভুল। কয়েকটি মামলার আসামি ইফতিকার গ্রেপ্তারই হননি। যে ব্যক্তি গ্রেপ্তার হননি, তাকে কীভাবে জেলখানায় পিটিয়ে মারা সম্ভব?- প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা।
মূল ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, পিন্টু রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসায় সোমবার মারা গেছেন। তার মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অপমৃত্যু - তা পরিস্কার নয়। যদি পিন্টুর ভাগ্নে দাবি করেছেন, অসুস্থতায় মৃতু হয়েছে।
এছাড়াও, সজীব ওয়াজেদ পোস্টে তথাকথিত ১২০ বছর বয়সী শেখ ইদ্রিসকে জেলে পাঠানোর কথাও বলে। যদিও ইদ্রিসের বয়স ১২০ এমন প্রমাণ নেই। মূল ঘটনা হচ্ছে ২০০৩ সালের জোড়া খুনের মামলায় ইদ্রিস আসামি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০১০ সালে মামলাটিকে চাঞ্চল্যকর হিসেবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যায়। ২০১৫ সালে ট্রাইব্যুনাল ইদ্রিসকে ১০ বছর সাজা দেয় খুনের পরিকল্পনা ও নির্দেশদাতা হিসেবে। হাইকোর্ট ২০১৮ সালে সাজা বহাল রাখে।
সাংবাদিক রাজীব আহমদ জয়ের এসব গুজব খন্ডণ করে লিখেছেন, সজীব ওয়াজেদ জয় ৫ আগস্টের পর এই নিয়ে ১৪তম বার গুজব ছড়িয়ে ধরা খেয়ে পোস্ট ডিলিট করেছেন। আগেই বলেছি, জয় জেনে বুঝেই গুজব ছড়ান। কাজ সমাধা হয়ে গেলে কয়েক মিনিট পর পোস্ট ডিলিট মারেন। এক দুইবার ভুলে ভুল তথ্য কেউ পোস্ট করতে পারে। তাই বলে এক বছরে ১৪ বার! এটা শুধু ডিলিটের হিসাব। আরও বহু মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন তার পেইজে আছে। আমার ধারনা আওয়ামী লীগকে শেষ না করে তিনি ছাড়বেন না।
বিষাক্ত ও দেশবিধ্বংসী চিন্তাধারার ধারকবাহক ফ্যাসিস্ট জয় আগেও বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুবার মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়েছে।সচেতন মহল বলছেন, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে অন্তবর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই জয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ভিত্তিহীন তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে। দেশের বাইরে পালিয়ে থেকে তার এই ধরনের কর্মকাণ্ড আওয়ামী লীগের দেশে থাকা নেতাকর্মীদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এর আগে ২২ জুলাই সজীব ওয়াজেদ জয় নিজের ভেরিফাইড আইডিতে একটি ভুয়া পোস্ট শেয়ার করে তা মুছে ফেলে। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পোস্টটিতে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। পোস্টে সে দাবি করে, জিওপি-তে পুলিশের গুলিতে একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে, যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সে ১১ মিনিটের মধ্যে সেই পোস্টটি ডিলিট করে দেয়। এই পোস্টের মাধ্যমে সহিংসতা উস্কে দেওয়ার পাশাপাশি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীর বেশ ধারণ করে নামানো হয় মাঠে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে বেশ কয়েকটি পোস্ট ডিলিট করেছে যা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে, তার পোস্টগুলোতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য বা গুজব ছড়ানো হয়েছে।
আরেকটি পোস্টে সে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল যা মিথ্যা প্রমাণিত হয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে পোস্টটি সরিয়ে ফেলে। একেরপর এক এই ধরনের ঘটনার ফলে অনেকে তাকে "অপতথ্যের জনক" হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তার ঘন ঘন পোস্ট ডিলিট করার প্রবণতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।