

আফগানিস্তানের সঙ্গে সব সীমান্ত ক্রসিং ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। গতকাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহির হুসাইন আন্দারবি।
তিনি বলেন, “আফগানিস্তানের সঙ্গে সব সীমান্ত ক্রসিং ও বাণিজ্য আপাতত বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা শেষে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। পাকিস্তানের নাগরিকদের জীবন আমাদের কাছে বাণিজ্যের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
ইসলামাবাদ বহুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে। যদিও কাবুল সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
চলতি মাসের ৯ অক্টোবর পাক বিমানবাহিনীর এক হামলায় টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ, তার সহযোগী ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হন। এ ঘটনার পর ১১ অক্টোবর আফগান বাহিনী পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী সেনা পোস্টে পাল্টা হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তানও ট্যাংক, ড্রোন, হেলিকপ্টার ও ভারী অস্ত্র নিয়ে পাল্টা অভিযান শুরু করে।
টানা চার দিন চলা সংঘাতে আফগান বাহিনীর প্রায় ২০০ সদস্য এবং পাকিস্তানের ২৩ সেনা নিহত হন। পরে ১৫ অক্টোবর দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এরপর কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত সংলাপে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়।
খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশের একাধিক সীমান্ত ক্রসিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তোরখাম। এই পথেই সাধারণ সময়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাকে তাজা ফল, শাকসবজি, খনিজ পদার্থ, ওষুধ, গম, চাল, চিনি, মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য দুই দেশে আদানপ্রদান হয়। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২৩০ কোটি ডলার।
তবে সীমান্ত বন্ধ থাকায় বর্তমানে তোরখাম সীমান্তের দুই পাশে আটকা পড়েছে পাঁচ হাজারেরও বেশি ট্রাক। জিও নিউজ জানিয়েছে, বাণিজ্য বন্ধের কারণে দুই দেশেই পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। পাকিস্তানে গত কয়েক দিনে টমেটোর দাম পাঁচগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :