মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মাঝে এক ভয়াবহ আশঙ্কা সামনে এসেছে—ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছে ইসরায়েল। ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, এই সম্ভাবনাকে আর উড়িয়ে দিচ্ছে না তেল আবিব। খামেনির ওপর আক্রমণ চালানোর বিষয়টি এখন আর কল্পনাতীত নয়, বরং এটি সময় ও কৌশলের ওপর নির্ভর করছে বলে ধারণা।
গত শুক্রবার (১৩ জুন) ইরানের ভেতরে আকস্মিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় ইরানের সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডার ও একাধিক পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই নতুন করে গুজব ছড়িয়েছে, খোদ খামেনিকেও টার্গেট করা হতে পারে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে এবং এটি দুইভাবেই শেষ হতে পারে— হয় ইরান স্বেচ্ছায় পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করবে, নয়তো এমন পরিণতির মুখে পড়বে যে তাদের পক্ষে আর পারমাণবিক পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।
ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল-১২-এর রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমিত সিগাল জানিয়েছেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র তাদের জানিয়েছে—“আয়াতুল্লাহ খামেনিকে গুপ্তহত্যার বিষয়টি আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে এটি এখনও নির্ভর করছে অনেক বিষয়ের ওপর।” একই বক্তব্য মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল-এর একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেখানে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ইরানের অভ্যন্তরীণ এবং পারমাণবিক কার্যক্রমকে সম্পূর্ণ অচল করে দিতে প্রয়োজন হলে তারা চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণে পিছপা হবে না।
১৩ জুনের ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান, ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড (IRGC) প্রধান, বিমানবাহিনীর প্রধানসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। একইসঙ্গে ৯ জন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকেও হত্যা করা হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ডগুলো ইরানের সামরিক ও বৈজ্ঞানিক নেতৃত্বকে দুর্বল করে দেওয়ার কৌশলের অংশ। এখন খামেনিকে সরাসরি টার্গেট করা হলে তা শুধু ইরান নয়, গোটা অঞ্চলে বিশাল সংকট ডেকে আনতে পারে।
ইসরায়েলের এমন অবস্থান ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যা করা হয়, তাহলে ইরানের প্রতিক্রিয়া হবে ভয়াবহ এবং যুদ্ধ দ্রুত বিস্তার লাভ করবে। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য এ মুহূর্তে উত্তেজনা হ্রাস ও কূটনৈতিক সমাধানই সবচেয়ে জরুরি। আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যার সম্ভাবনা যে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে, তা বোঝায় মধ্যপ্রাচ্যের সংকট কতটা গভীর। তথ্যসূত্র : ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল
আপনার মতামত লিখুন :