আফ্রিকান ইউনিয়ন কর্তৃক ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি, আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইথিওপিয়ায় নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত আব্রাহাম নেগুইসেকে বৈঠক থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পেছনে ছিল রুয়ান্ডার গণহত্যা নিয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভায় বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশ ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতির বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানায়, যা বৈঠক স্থগিত করতে বাধ্য করে। এরপর আফ্রিকান ইউনিয়ন এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, যাতে জানা যায়, কে বা কারা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
বৈঠকের সময় ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের উপস্থিতি অপ্রত্যাশিত ছিল এবং একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা তার উপস্থিতির বিরুদ্ধে আপত্তি জানান। পরে, যখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তখন বৈঠক স্থগিত করা হয় যতক্ষণ না তিনি হল ত্যাগ করেন। আফ্রিকান ইউনিয়ন পরবর্তীতে এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে এবং জানতে চাচ্ছে, কে বা কারা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
আফ্রিকান ইউনিয়নে ইসরাইলের পর্যবেক্ষক মর্যাদা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। ২০০২ সালে আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর, সদস্য না হওয়া আফ্রিকার বাইরের দেশগুলোর জন্য পর্যবেক্ষক মর্যাদা চালু করা হয়েছিল। ২০২১ সালে ইসরাইল এই মর্যাদা পেয়েছিল, তবে পরবর্তীতে আফ্রিকান দেশগুলোর সম্মিলিত সিদ্ধান্তে সেটি বাতিল করা হয়। এর কারণ ছিল ইসরাইলের দখলদারি ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান আগ্রাসন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি সম্মেলনে ইসরাইলি প্রতিনিধি দলকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার পর, ইসরাইলের বিরুদ্ধে আফ্রিকার সদস্য দেশগুলো একমত হয়েছে এবং তাদের মতে, ফিলিস্তিনে চলমান দখলদারি ও গাজায় গণহত্যার কারণে ইসরাইলের উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য নয়। ২০২২ সালে, আলজেরিয়ান কূটনীতিকরা ইসরাইলের নতুন করে দেওয়া পর্যবেক্ষক মর্যাদা বাতিলের জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এই ঘটনা আফ্রিকান ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ইসরাইলের ভূমিকা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তোলেছে। যদিও ইসরাইলের বিরুদ্ধে আফ্রিকার অনেক দেশ ঐক্যবদ্ধ, তবে এই পরিস্থিতি বিশ্বে বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিসরে আলোচনার জন্ম দেবে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
আপনার মতামত লিখুন :