ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুইদিনে গাজায় নিহত ১৪০ এরপরও যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে কাতারে


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ /
ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুইদিনে গাজায় নিহত ১৪০ এরপরও যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে কাতারে

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলার নির্মমতা অব্যাহত রয়েছে।গত দুই দিনে প্রায় ১৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধুমাত্র শুক্রবার(০৩ জানুয়ারি) ৬১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, আর বৃহস্পতিবার(০২জানুয়ারি) এই সংখ্যা ছিল ৭৭। এরমধ্যে কাতারে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই এই পরিস্থিতি সামনে আসে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবারের হামলায় নিহত এবং আহতদের সংখ্যা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে বৃহস্পতিবারের হামলায় গাজা উপত্যকার অন্তত ৮টি এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। এতে ৭৭ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন ১৪৫ জন।

বৃহস্পতি ও শুক্রবারের হামলার পর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত ১৫ মাসের অভিযানে মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৫ হাজার ৭১৯ জনে। সেই সঙ্গে এই সময়সীমায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ লাখ ৮ হাজার ৫৮৩ জন।

গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে আক্রমণের পর থেকে গাজার ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহতভাবে চলছে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪৫,৬৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৮,৫৮৩ জন আহত হয়েছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে যে, কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুসাম আবু সাফিয়ার গ্রেপ্তার ইসরায়েলের একটি বড় পরিকল্পনার অংশ, যা গাজার স্বাস্থ্যখাতকে ধ্বংস করতে চায়। সংস্থাটি এটিকে “গণহত্যার উদ্দেশ্য” বলে অভিহিত করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক জানিয়েছেন যে, গাজার ২৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১৩৬টি ইসরায়েলি হামলা হয়েছে, যার ফলে বিশাল পরিমাণ মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে।

কাতারে চলমান আলোচনায় হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেছেন, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার, এবং স্থানীয় জনগণকে তাদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল নিজেদের নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষার জন্য লড়াই করছে। হামাসকে পুরোপুরি অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার আগ পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

এই সংকট গাজার জনগণের জন্য মানবিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। আলোচনার মাধ্যমে শান্তি এবং মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা,আনাদোলু এজেন্সি