জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার হাসিনা পদত্যাগ করে। পরে শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে। তিন মাসে ব্যবধানে দেশের আশানুরূপ উন্নতি হয়েছে। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে আওয়ামী লীগ এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান গতকাল একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ফ্যাসিস্টকে সব সময় কেন ফ্যাসিস্ট বলবো।
জামায়াত আমিরের এই কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনরা অনেকেই তার সমালোচনা করছেন। অনেকেই ধারণা করছেন, জামায়াত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে। কেউ কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগ তো তাদের পুরাতন বন্ধু। তাই হয়তোবা তারা আওয়ামী লীগের প্রতি উদারতা সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা কি এটা জানে না, সাপের সঙ্গে কোনো বন্ধুত্ব নয়। সাপ একবার সুযোগ পেলে ছোবল দিবেই। যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। তাদের প্রতি কোনো উদারতা নয়। তারা ক্ষমার অযোগ্য। জামায়াত যদি তাদের ক্ষমা করতে চায়, তাহলে তারা সবচেয়ে বড় ভুল করবে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক স্ট্যাটাসে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি এখন কিছু সুশীল বের হচ্ছে। অতিরিক্ত সুশীলগিরি দেখিয়ে কেউ কেউ দেখি নরম সুরে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু সবাই যে ক্ষমার যোগ্য না, এই শিক্ষাটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ, ইনফ্যাক্ট মহাগুরুত্বপূর্ণ।
এই স্ট্যাটাসের পর হাসনাত আব্দুল্লাহকে নেটিজেনরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছে। বিশেষ করে তার প্রোফাইলে দেখা যায়- আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই সুন্দর স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য।
হাসনাত আরও লেখেন, পবিত্র কোরআনের সূরা লাহাব আমি যতবার পড়েছি, ততবারই যেই ব্যাপারটা আমার মাথায় আসে আবু লাহাবের প্রতি স্বয়ং আল্লাহ কেন এমন কঠোর অবস্থানে চলে গেলেন যে তার শাস্তির ব্যাপারে কোরআনে একেবারে ওইভাবে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়ে বলে দিলেন? ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুই হাত এবং সে নিজেও! শুধু আবু লাহাবই না, তার ইন্ধনদাতা স্ত্রীর প্রতিও কঠোর শাস্তির বর্ণনা কেন এভাবে ঘোষণা করে দিলেন? আল্লাহ একদিকে যেমন মহাপরিক্রমশালী কঠোর বিচারক, অন্যদিকে উনি তো পরম ক্ষমাশীলও।
তিনি লিখেন, সত্যি করে বলেন তো, আশেপাশে এমন কোন আওয়ামী লিগার দেখেছেন যারা অনুতপ্ত? জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজার মানুষ মেরে ফেলা, পঁচিশ হাজার মানুষকে চিরতরে মারাত্মক আহত করে ফেলা নিয়ে ন্যুনতম কোনো অনুশোচনা? বিগত ১৫ বছরে ওরা যে হাজার হাজার মানুষকে মেরে ফেলেছে, গুম, নিপীড়ন, লুটপাট চালিয়েছে—এগুলো নিয়ে ওদের ভেতর ন্যুনতম অনুশোচনা দেখেছেন? বরং ওরা প্রতিশোধ নিতে চায় সুযোগ পেলেই। সুযোগ পেলেই তাদের অরিজিনাল রূপটা বের করে ফেলতে চায়। এরা হলো এই লেভেলের অমানুষ!
ডতনি লিখেন, ক্ষমা করা যায় তাদেরকে, যাদের ভেতর অনুশোচনাবোধ জাগ্রত হয়, যারা অনুতপ্ত হয়। কিন্তু যারা নিজেদের চরম অপরাধের পরও ন্যুনতম অনুতপ্ত না, এমন অমানুষদের ক্ষমা করার মানে হলো অন্যদের প্রতি অবিচার করা এবং সামনে ওদের জন্য অপরাধ করার দুয়ার উন্মুক্ত রাখা। এজন্যই আমি এদের বিচার চাই, কঠোর বিচার চাই।
সুলতান মাহমুদ আরিফ নামে একজন লিখেছেন, আওয়ামী লীগ দানব, ওদের সহচররাও দানব। এ দানবের দল এখনও আছে, আমার আপনারা আশপাশে। ওরা চেহারা পাল্টিয়েছে, চরিত্র না। খুনির প্রতি দয়া দেখানো, খুনকে সাপোর্ট দেওয়া নয় কি?
মো. সাইফুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, একজন আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের বাচ্চাকেও অনুশোচনা করতে দেখবেন না। উল্টো তারা ভিকটিম গেইম খেলতেছে। এদেরকে মূলোৎপাটন ছাড়া বাংলার জমিনে শান্তি আসবে না। ধন্যবাদ হাসনাত আব্দুল্লাহ ভাইকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে থাকার জন্য।