ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু
মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় ত্রাণ বন্ধ করে দিয়েছে এবং অঞ্চলটি পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। প্রথমবারের মতো যুদ্ধ বন্ধে সম্মতির ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এজন্য তিনি কিছু শর্ত দিয়েছেন। হামাস শর্তগুলো মানলে তেল আবিব যুদ্ধ থামাতে প্রস্তুত। রোববার (১৮ মে) ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
কার্যালয় জানিয়েছে, দোহায় ইসরাইলের আলোচক দল হামাসের সাথে একটি চুক্তির সব সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখছে। এ সময় স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতি বা স্থায়ী যুদ্ধ সমাপ্তি উভয় সম্ভাবনাই দেখা হবে।
মার্কিন সহায়তায় মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনাটি হচ্ছে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলো স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত সীমিত বন্দীবিনিময় ও সাময়িক যুদ্ধবিরতি, অথবা হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও নির্বাসনের শর্তে একটি বড় চুক্তি।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানায়, ‘এই মুহূর্তে দোহার দল প্রতিটি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কাজ করছে। উইটকফের কাঠামোও দেখছে। আবার যুদ্ধ সমাপ্তির পরিকল্পনাও বিবেচনা করছে। তবে চুক্তিতে সকল বন্দীর মুক্তি, হামাস নেতাদের নির্বাসন ও গাজার নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এই বিবৃতি এমন সময় এসেছে, যখন ইসরাইল ‘গিডিয়নের রথ’ নামে গাজায় আক্রমণ আরো জোরদার করেছে। এতে নতুন এলাকা দখল, দক্ষিণে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতি ও ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে। সমালোচকরা একে জাতিগত নির্মূল বলছেন।
ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন আক্রমণের উদ্দেশ্য হলো হামাসকে সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো। যেন অবশিষ্ট বন্দীরা মুক্তি পায়। তবে ইসরাইল পরিষ্কার করে দিয়েছে যে এ যুদ্ধবিরতি যুদ্ধ শেষের অংশ নয়। ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসনকারী হামাস বলেছে, যেকোনো চুক্তিতে ইসরাইলের পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার ও যুদ্ধ সমাপ্তির একটি স্পষ্ট রূপরেখা থাকতে হবে।
এদিকে, গাজা “জয়” করার পরিকল্পনা নিয়ে ইসরাইলি নেতাদের বক্তব্য ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় ত্রাণ বন্ধ করে দিয়েছে এবং অঞ্চলটি পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
হামাস বলছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে তারা বন্দীদের মুক্তি দেবে। দোহার আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘হামাস বন্দীর সংখ্যায় নমনীয়। তবে সমস্যা হচ্ছে ইসরাইলের যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হওয়া।”
স্কাই নিউজ আরাবিয়া ও বিবিসি জানায়, হামাস দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময়ের প্রস্তাবে অর্ধেক বন্দী মুক্ত করতে চায়। তবে হামাসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘ইসরাইল যুদ্ধ শেষের প্রতিশ্রুতি না দিয়েই বন্দী মুক্তি চায়।’
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, স্কাই নিউজ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আপনার মতামত লিখুন :