কমেছে শুল্ক, তবুও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজ ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও কমেনি দাম


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ৮:৫২ পূর্বাহ্ণ /
কমেছে শুল্ক, তবুও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজ ইলিশের সরবরাহ বাড়লেও কমেনি দাম

পেঁয়াজ ও আলুতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। তবুও খুচরা বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্য। দেশে আলু এবং পেঁয়াজের বিদ্যমান বাজারমূল্য ও সরবরাহ বিবেচনায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনাক্রমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আলু আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার পাশাপাশি ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক তুলে দিয়েছে।

এ ছাড়া পেঁয়াজ আমদানিতে বিদ্যমান ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ট্যারিফ কমিশনের প্রস্তাবনা মোতাবেক এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর। এর একদিন পরে আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আগের মতো ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি আলুও আগের মতো ৬০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজার থেকে পেঁয়াজ, আলু কিনে এনে মালিবাগের স্থানীয় মুদির দোকানে বিক্রি করেন মোরশেদ আলম নামের এক বিক্রেতা। বাজারে এসবের দাম বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরেই খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ১২০ টাকায় এবং আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আজও সেই দামই চলছে। পেঁয়াজ ও আলুতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার তা শুনেছি কিন্তু বাজারে এর প্রভাব পড়তে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। কারণ আমি বেশি দামেই পাইকারি বাজার থেকে কিনে এনেছি। যে পরিমাণ মাল এনেছি এটা আরও ৩/৪ দিন চলবে আমার দোকানে। এটা শেষ হলে ফের মাল আনব, তখন যদি কম দামে পাই তাহলেই কম দামে বিক্রি করব।’

মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করেন রবিউল রহমান নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বাজারে এসে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে আলু ও পেঁয়াজও কিনেছেন। বাজারে এই দুই পণ্য বাড়তি দাম বিষয়ে তিনি বলেন, আজ অনেক দিন ধরে ১২০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। সেই আলু কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই দুইটি পণ্যের যদি এতটা দাম হয় তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কঠিন হয়ে যায়। সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে পণ্যের দাম নির্ধারণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

এদিকে রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ রানা আলু পেঁয়াজের দাম বিষয়ে বলেন, ‘আজ সকালেই আমি পাইকারি বাজার থেকে আলু পেঁয়াজ কিনে এনেছি। পাল্লা হিসেবে (৫ কেজি) কিনে সব খরচ বাদে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়েছে ১১০ টাকা। এখন পরিবহন করে নিয়ে আসার পর খুচরা ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। একই ভাবে আলুর পাল্লা পড়েছে ৫৫ টাকা এখন আমার দোকানে খুচরা বিক্রি করছি ৬০ টাকায় প্রতি কেজি। আজকে এগুলোর কেনা দাম আগের মতো ছিল, বাজারে যখন কম দামে কিনতে পারবো তখন খুচরা বাজারেও আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারব।’

বেড়েছে চাল, মুরগি ও ডিমের দাম

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে বেড়েছে চাল, মুরগি ও ডিমের দাম। আগের দামেই বিক্রির হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরু চালের দাম তেমন না বাড়লেও কেজিতে প্রায় ২ টাকা বেড়েছে মোটা চালের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৬ টাকায়। সরু চালের কেজি মিলছে ৭০ টাকার ওপরে। বন্যায় ত্রাণ হিসেবে মোটা চালে বিতরণে চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের। কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত সপ্তাহে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ১৭০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজনে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। আলু ৬০ আর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। তবে অন্যান্য সবজির মিলছে গড়ে ৫০ টাকার মধ্যে।

কমেছে গরুর মাংসের দাম

বাজারে কিছুটা কমেছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। রামপুরা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী হালিম চৌধুরী বলেন, দাম বেশি থাকার কারণে মাংস বিক্রি খুব কম ছিল। যে কারণে বাধ্য হয়ে অনেক ব্যবসায়ী দাম কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন।

দাম কমেনি ইলিশের

মৌসুমের মাঝামাঝি এসে বাজারে ইলিশের সরবরাহও বেশ বেড়েছে। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী কমেনি দাম। ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজির কিছুটা বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকায়। কমবেশি ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেনা যাচ্ছে ৯০০ থেকে ১১০০ টাকায়। ছোট ইলিশের কেজি ৬০০ টাকা।