মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না মেনে কানাডায় পালিয়ে গেছেন মরক্কোতে সদ্য বিদায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদ। রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার লক্ষ্যে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
তিনি কানাডায় থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর তাকে দেশে ফিরে ‘অনতিবিলম্বে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি দেশে না ফিরে কৌশলে কানাডা চলে যান। শুক্রবার তার একটি ফেসবুক পোস্ট সবার নজরকাড়ে। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘ড. ইউনূসের অধীনে নৈরাজ্যের পথে ধাবিত বাংলাদেশ—বিশ্বের নীরবতা বেদনাদায়ক’।
‘৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈধ সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।’ এমনটিও দাবি করেছেন এই কূটনীতিক। কূটনীতিক হারুনের ফেসবুক পোস্ট সামনে আসার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কূটনীতিক এবং তার পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্ট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদ তার ফেসবুক প্রোফাইলে একটি লেখা পোস্ট করেছেন, যেখানে তিনি পূর্ববর্তী নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী সরকারের গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট–পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমে নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন। পোস্টে হারুন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ, প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করেছেন।
এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে ফেসবুকে এ ধরনের লেখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং এর বিষয়বস্তু গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এরূপ রচনা লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ‘নির্যাতিত কূটনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্টগুলো বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। মন্ত্রণালয় মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।