কৃত্রিম জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় খুলনার পাইকগাছায় ২০ গ্রামের মানুষ


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ২৭, ২০২৫, ৭:৩৪ অপরাহ্ণ /
কৃত্রিম জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় খুলনার পাইকগাছায় ২০ গ্রামের মানুষ

পাইকগাছা, খুলনা প্রতিনিধিঃ

খুলনার পাইকগাছার নাছিরপুর খাস খাল অবৈধ দখলদারের কবল থেকে জলমহালটি মুক্ত না হওয়ায় হরিঢালী-কপিলমুনি দুটি ইউনিয়নের সংলগ্ন ২০টি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ কৃত্রিম জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছে এ ভরা বর্ষা মৌসুমে। নেট পাটাতন ও খালের মেইন গেটের পানি সরানো নিয়ে সংশয় রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলি।

জানা যায়, খুলনা জেলার এক সময়কার নৌযান চলাচলের ব্যবহৃত নাছিরপুর নদে অসংখ্য লঞ্চ ষ্টিমার চললেও এখন তা সরকারের খাস জল মহালে রূপান্তরিত হয়েছে। ১৯৬২ সালে খুলনাঞ্চলে কৃষির গুরুত্ব বিবেচনা করে তৎকালীন সরকার বড় বড় নদী ও জলাভূমির তীর দিয়ে ওয়াপদার বাঁধ সৃষ্টি করে। সেই থেকে নাছিরপুর নদে নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ার পর সেটি খাস জল মহাল হিসাবে সরকার রাজস্ব পাচ্ছে। ৬০ একরের খাস জল মহালের দুই তীরে ২০টি গ্রামের কৃষিকাজের সুবিধার্থে ওয়াপদা বাঁধ সংলগ্ন মধ্যেবর্তী স্থানে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করে। যার মাধ্যমে কৃষিকাজের সুবিধাসহ বর্ষা মৌসুমে গ্রাম এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে আসছে দীর্ঘদিন।

স্বাধীনতার পর জাল যার জ্বলা তার, ভিত্তিতে এই জলমহালটি একসনা বন্দোবস্ত বা ইজারা দিয়ে আসছে। সে ক্ষেত্রে তৈরি হয় নীতিমালা। ঐ নীতিমালার শর্তানুসারে খাস জলমহালে বাঁধ পাটাতন ও নেট ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় বলে ঘোষিত থাকলেও ১৯৯০ সালে ঐ আইনটি প্রভাবশালীদের জন্য শুধু মাত্র খাতা কলমে রয়েছে বাস্তবে নেই। এখানে নেট পাটাতন ও বাঁধ দিয়ে এবং স্লুইস গেট দিয়ে লোনা পানি তুলে মাছ চাষ করা হচ্ছে।

ফলে খাস খালটির নাব্যতা হ্রাস পেয়ে ভরাট হয়ে গেছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে উক্ত খাসখালটির দুই তীরের বসবাসরত ২০ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ কৃত্রিম জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে হাজার হাজার বিঘার ফসলি জমি পানির নিয়েছে ডুবে ফসল হারাচ্ছে। ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে শত শত মৎস্য ঘের ও পুকুর ডোবার মাছের। যার প্রেক্ষিতে এলাকার ২০ গ্রামের মানুষের সমন্বয়ে গড়ে তুলেছিল পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি নামক সংগঠন।

এ সংগঠনের আহ্বায়ক এম,বুলবুল আম্মেদ বলেন জেলায় দুর্নীতি কর্মকর্তারা কোন ভাল উদ্যোগকে কাজে লাগাতে দেয় না। চারিদিকে খাল নদী থাকলেও দীর্ঘদিন জ্বল মগ্ন ভুক্তভোগী প্রতাপকাটি বাসিন্দা ডা. আঃ ওহাব বলেন আমাদের গ্রামের দীর্ঘ ১৮ বছরের পানি নিষ্কাশন কোন ব্যবস্থা নেয়নি কোন জনপ্রতিনিধিরা। যার কারণে কেহ মারা গেলে লাশ পানিতে রেখে আসতে হয়।

খালের বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মুজাহিদ হাজরা বলেন ২/৫ জন খালের সহিত জড়িত খাসখালটা উন্মুক্ত হলে ফসল সহ সকল মানুষের উপকার হবে।

কপিলমুনি বণিক সমিতির আহ্বায়ক শেখ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন বর্তমানে সাবেক জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন ডাবলু খাল উন্মুক্ত করার কথা বলে এখন নিজেই জড়িয়ে পড়েছে এলাকার গরিব মানুষের জন্য খাস খাল উন্মুক্ত করার বিকল্প নেই।

এ ব্যাপারে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত পাইকগাছার কপিলমুনির নাছিরপুর খাস খাল উন্মুক্ত করতে ইতি মধ্যে চুড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে,খুব শীঘ্রই খাসখাল উন্মুক্ত করা হবে।