খালেদা জিয়া দুই পুত্রবধূ সাথে নিয়ে ১০ মে’র মধ্যে দেশে ফিরতে পারেন


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : মে ১, ২০২৫, ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ /
খালেদা জিয়া দুই পুত্রবধূ সাথে নিয়ে ১০ মে’র মধ্যে দেশে ফিরতে পারেন

দু’টি সূত্র বলেছে, ৫ মে অথবা ৯ মে দেশে ফিরতে পারেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার ওপর। এখন পর্যন্ত এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিত হয়নি বলে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, ‘৪ ও ৫ মে ধরে পরিকল্পনা করছি। ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) দেশে আনার প্রস্তুতি চলছে। যদিও এখনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কনফার্ম হয়নি। আমরা অ্যাম্বুলেন্সের অপেক্ষায় আছি।’

জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য সহযোগিতা চেয়ে খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে সেটা সম্ভব না হলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বিমানের বিজনেস ক্লাসে করে দেশে ফিরতে পারেন।

খালেদা জিয়ার মরহুম ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী শর্মিলা দেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকলেও দীর্ঘ দিন পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমানের সহধর্মিণী জুবাইদা। তারেক রহমানের সাথে তিনিও এক এগারো সরকারের সময় লন্ডন চলে যান।

খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে আনার জন্য সহযোগিতা চেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পেয়েছে কি না এবং এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় কী ধরনের সহযোগিতা করবে-মঙ্গলবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেনের কাছে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চান। চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘ওটা নিয়ে তারা কাজ করছেন।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, ‘লন্ডন ক্লিনিক থেকে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) পূর্ণাঙ্গ ছাড়পত্র দেয়া হয়নি।’ বলা হয়েছে, তিনি দেশে আসতে পারবেন। তবে চিকিৎসার মধ্যেই তাকে থাকতে হবে।

তিনি জানান, খালেদা জিয়ার সাথে তার দু’ পুত্রবধূ ডা: জুবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান দেশে ফিরবেন। তিন নাতনি সবাই দেশে ফিরবেন কি না নিশ্চিত নয়।

লন্ডন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের সফরসঙ্গী ও উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সাথে ছেলে তারেক রহমানের ফেরার সম্ভবনা নেই। তারেক রহমানের ফেরা নির্ভর করছে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ওপর। আমি, ডা: জাহিদ ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সাথে আছি। এছাড়া ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও গৃহপরিচারিকাও সাথে আছেন।’

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেসে যুক্তরাজ্যে যান খালেদা জিয়া। সেখানে তাকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে থেকে খালেদা জিয়া সরাসরি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। এই হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসাধীন চলছে। লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে ফলোআপ করছেন নিয়মিত। তিনি আগের চেয়ে বেশ ভালো আছেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে ভালো সময় কাটাচ্ছেন।

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ২০২০ সালে তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি হয়নি। এরপর চার বছরে তাকে কয়েক দফা ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। জুলাই ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান বেগম খালেদা জিয়া। এরপর ৭ জানুয়ারি লন্ডনে চিকিৎসার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।