খুলনায় এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইবনাত বিনতে বুশরা শিফা (১৮) আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার দুপরে নগরীর সদর থানা এলাকার দোলখোলা মোড়ের বাবুর গ্যারেজ সংলগ্ন ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিফা রূপসা বঙ্গবন্ধু কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পিতার নাম বাবু শেখ। অপরদিকে এ ঘটনার তথ্য আনতে গিয়ে লাঞ্ছণার শিকার হয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মো: রাজু হাওলাদার।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে ইবনাত বিনতে বুশরা রবিবার বেলা ২টার দিকে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অচেতন অবস্থায় পরিবারের সদস্য তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত্যু বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মৃতদেহ খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে দেওয়া হবে।
এদিকে মৃত্যু শিক্ষার্থীর তথ্য আনতে গিয়ে হাসপাতালে লাঞ্ছণার শিকার হয়েছেন খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খুলনাঞ্চলের স্টাফ রিপোর্টার ও রাজধানী টিভির সাংবাদিক মো: রাজু হাওলাদার। তিনি এ ঘটনায় দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা: মেহনাজ মোশারফকে দায়ী করেন।
সাংবাদিক রাজু জানান, তিনি হাসপাতালে জরুরী বিভাগে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তথ্য চান। কিন্তু ডা: মেহনাজ মোশারফ তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। তখন তিনি মোবাইল বের করলে আনসার সদস্য ও আশপাশের কর্মচারীদের ডেকে আনেন। তারা জোর করে সাংবাদিক রাজুর মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় ও তাকে আটকে রেখে ডা: মেহনাজ মোশারফ নিজে ও আনসার বাহিনী এবং আউটসোর্সিং এর কর্মীরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও অন্যান্য সাংবাদিকরা সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকেদের জানান, সাংবাদিক লাঞ্ছণার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।
এই ঘটনায় তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া দৈনিক খুলনাঞ্চল পত্রিকার সম্পাদক, সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কিমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন, খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তফা জামাল পপলু, দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার ও সাংবাদিক নেতা হাসান হিমলায়, খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও এস এস টিভির খুলনা প্রতিনিধি রকিবুল ইসলাম মতি, কালবেলার খুলনা ব্যুরো প্রধান বশির আহমেদ, খুলনা প্রেস ক্লাবের নির্বাহি কমিটির সদস্য ও দৈনিক যুগান্তরের খুলনা ব্যুরো প্রধান আহমেদ মুসা রঞ্জু, খুলনা প্রেসক্লাবের নির্বাহি কমিটির সদস্য ও একুশের টেলিভিশনের খুলনা প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম নুর, দৈনিক কালের কণ্ঠে ডিজিটালের খুলনা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, দৈনিক খুলনার সাংবাদিক ইমরান হোসেন ও চিত্র সাংবাদিক দুলাল, সোহেল রানা, প্রান্তসহ অসংখ্য সাংবাদিকরা। এ সময় তাৎক্ষনিকভাবে তারা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
তারা বলেন, একজন সাংবাদিকের কাজ হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ করা। তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা এটি নিন্দনীয় ও স্বৈরাচারী মনোভাব। স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।