খুলনায় প্রথমবারের মতো শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করবে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। এই লক্ষ্যে নগরীর আড়ংঘাটা সিটি গেট স্টেশন থেকে শিরোমনি বিসিক নগরী পর্যন্ত আট কিলোমিটার জুড়ে বসানো হচ্ছে পাইপ লাইন। আগামী জুন থেকে শুরু হবে গ্যাস সরবরাহ।
নাগরিক নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও গ্যাস সরবরাহ শুরু করছে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। তবে এই অঞ্চলের শিল্প কলকারখানা প্রসারে বৃহত্তর পরিসরে গ্যাস সরবরাহের চিন্তা করতে হবে।
২০১২ সালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনার আড়ংঘাটা সিটি গেট স্টেশন পর্যন্ত বসানো হয় পাইপ লাইন। এরপর এক যুগ পার হলেও এখান থেকে গ্যাস সরবরাহ করতে পারেনি সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
দীর্ঘ এক যুগপর নগরীর শিরোমনি এলাকার বিসিক শিল্প নগরীতে গ্যাস সরবরাহের চিন্তা করছেন তারা। এই লক্ষ্যে আট দশমিক দুই কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বসানো হচ্ছে পাইপ লাইন। যোগীপোলে তৈরী করা হচ্ছে রেগুলেটিং মিটারিং স্টেশনও।
ক্যাসেল কন্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের সাইড সুপারভাইজার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আড়ংঘাটা থেকে শিরোমনি বিসিক পর্যন্ত পাইপ লাইন বসানো হচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে পাইপ লাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন করা হবে।
পাঁচ কোটি টাকা ব্যায়ে এই প্রকল্প আগামী জুন মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড। এর ফলে প্রতিদিন ২৫ লাখ ঘনফুট গ্যাস বিসিক শিল্প নগরীতে সরবরাহ করা যাবে বলছে কোম্পানিটি।
সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক উত্তম কুমার সরকার বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে আমরা বিসিকে চারটি কম্পানিকে গ্যাস সরবরাহ করতে পারবো। পর্যায়ক্রমে চাহিদা অনুযায়ী অন্য শিল্প কারখানাতেও গ্যাস সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, আড়ংঘাটা থেকে পাইপলাইনে ৩০০ পিএস চাপে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। যেটি যোগিপল স্থাপিত ডিস্ট্রিক রেগুলেটিং স্টেশন থেকে ১৪০ পিএস চাপে শিল্প কারখানায় যাবে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ২৫ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
দীর্ঘদিন পরে সামান্য পরিমানে গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়াকে সাধুবাদ জানিয়ে নাগরিক নেতারা বলছেন, কিন্তু শিল্প নগরীর খুলনায় শিল্প কলকারখানার প্রসারে বৃহৎ পরিসরে বৃহৎ শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান জানান, দীর্ঘ এক যুগপর সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিঃ যে গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে পেরেছে এটি আমাদের জন্য সুখবর। কিন্তু শিল্প নগরী খুলনার ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে এখানে বিনিয়োগ বাড়াতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ভারী শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহের ব্যাবস্থা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বৃহৎপরিসরে পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে। তাহলে যেমন এ অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়বে, তেমনি নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
ইতিমধ্যে বর্তমানে বিসিক শিল্প নগরীর চারটি কম্পানি গ্যাসের জন্য আবেদন করেছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো পাঁচ ছয়টি কম্পানি। পর্যায়ক্রমে বিসিক শিল্প নগরীর অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতেও চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও ভোলা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস এনে খুলনায় স্থাপিত বিদ্যুৎ কম্পানিসহ বৃহৎ শিল্প কল কারখানায় গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে কম্পানিটির।