আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্তদের মামলা আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্তদের মামলা ইনশা আল্লাহ আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।’
আজ শনিবার খামারবাড়ী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা ট্রাইব্যুনাল আছে, একটা তদন্ত সংস্থা আছে যেখানে মাত্র ১৭ জন ইনভেস্টিগেশন অফিসার আছেন। আমরা আমাদের প্রসিকিউটর এজেন্সিতে ১০ জন প্রসিকিউটর আছেন। আরও হয়তো ২/৪ যুক্ত হবেন এতে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রধান ফোকাস হচ্ছে, গুম এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার যে অপরাধ বাংলাদেশের মাটিতে হয়েছে সেই গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড এবং যারা সর্বোচ্চ জায়গায় বসে থেকে এই অপরাধগুলো সংঘটিত করেছেন, আমাদের প্রায়োরিটি হচ্ছে তাঁদের বিচার করা। সেই ক্ষেত্রে আমরা হাজার হাজার মানুষের বিচার করতে পারব না, সেই লক্ষে আমরা অগ্রসরও হচ্ছি না।’
৫৬ হাজার বর্গমাইলের সর্বত্র এই মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ছিল। এর সঙ্গে গোটা বাহিনীর অধিকাংশ অফিসারকে সংযুক্ত করা হয়েছিল। দেশব্যাপী সবকিছুর বিচার করতে চাই, কিন্তু এই ট্রাইব্যুনালের পক্ষে সেই বিচার করা সম্ভব নয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত টপ কমান্ডারদের বিচার করা হয়। আমরা সে কারণেই এই গণহত্যার যিনি প্রধান নিউক্লিয়াস ছিলেন—শেখ হাসিনাসহ তাঁর নিচের দিকের কয়েকজন ছিলেন—তাঁদের বিচারকে প্রায়োরাটাইজ (অগ্রাধিকার) করছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা তাঁদের বিচারটা করতে চাই এবং করতে সক্ষম বলে আমরা মনে করি।’
দুই দিন আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমাকে যা বলেছেন তাতে সাহসটা বেড়ে গেছে। তিনি বলেছেন, অনেক প্রায়োরিটি আছে সরকারের কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রায়োরিটি হচ্ছে যারা দেশটাকে গুম এবং খুনের স্বর্গরাজ্য করেছিল, যারা ছাত্র–জনতার রক্তে বাংলাদেশের মাটি রঞ্জিত করেছে, তাদের বিচারটা আমাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি। কাজেই এই জায়গায় ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবার বিচার করতে পারব না, কিন্তু টপ স্কোরারদের বিচার ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনটেইন করে নিখুঁত এবং নিরপেক্ষভাবে ট্রান্সপারেন্ট ভাবে, আপনাদের বুঝিয়ে দিব যে কতটা স্বচ্ছভাবে বিচার করা যায় এবং যারা সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁদের অপরাধটা কী।’
দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় যত অপরাধ হয়েছে গ্রাউন্ড লেভেলে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে, আদালতে যে বিচার চলছে সেটা চলমান থাকবে। সেই বিচারগুলো করতে কত সময় লাগবে সেটা সংশ্লিষ্ট আদালত বলতে পারবেন বলেও যোগ করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর।
আপনার মতামত লিখুন :