গভীর রাতে হঠাৎ করেই উধাও হলো নেতানিয়াহু

ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ একটি সুরক্ষিত বাংকারের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন। সেখান থেকেই তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএন-কে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া ইরানের নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ আজও (শনিবার) অব্যাহত রয়েছে। ইরানের ছোড়া শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আতঙ্কিত হয়ে তার দপ্তর ছেড়ে গোপন বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন।

সিএনএন জানিয়েছে, ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ একটি সুরক্ষিত বাংকারের ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন। সেখান থেকেই তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএন-কে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার দিনের শুরুতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে নেতানিয়াহুর বর্তমান অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা অবশ্য একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দাবি করা হয়েছে, তেহরানের বিরুদ্ধে হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অজ্ঞাত কোনো স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভবত তাকে গ্রিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এই তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

হামলা থেকে বাঁচতে ইসরায়েলি সাধারণ নাগরিকদেরও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, ইরানের এবারের হামলা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ব্যাপক ও তীব্র। রাতে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে যে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে এবং সেগুলো প্রতিহত করার পাশাপাশি হতাহতদের উদ্ধারেও তারা কাজ করছেন।

শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের দিকে ইরানের ছোড়া অসংখ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে আতঙ্কিত হয়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। রাতের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বাধার কারণে সৃষ্ট আলোর রেখা ও আগুনের গোলার দৃশ্য পুরো শহরকে আলোকিত করে তুলেছিল।

এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৬০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের তথ্য মতে, আহতদের মধ্যে একজন নারী গুরুতরভাবে আহত হওয়ার পর মারা গেছেন। এছাড়াও, একজন ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত এবং বেশ কয়েকজন মাঝারি মাত্রায় আহত হয়েছেন। বাকিরা হালকাভাবে আহত হয়েছেন এবং তীব্র উদ্বেগে ভুগছেন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়েছে, যারা গুরুতর আহত হয়েছেন, হামলার সময় তারা আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন না। এই ঘটনা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।