ঈদ আনন্দে বাড়িতে জম্পেশ খানাপিনার আয়োজন থাকে। বিশেষ করে কোরবানির ঈদে গরুর মাংসের অনেক পদ রান্না করা হয়। এজন্য মাংস খাওয়াটাও হয় পরিমাণে একটু বেশি। কিন্তু মনে রাখতে হবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো খাবার খাওয়া উচিত হয়। সেটি মাংসই হোক কিংবা অন্য যেকোনো খাবার।
কোরবানির মাংস দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু অনেক খাবার। সেসব খাবার থেকে লোভ সামলে রাখা মুশকিল। অনেকেরই ধারণা, গরুর মাংস খেলেই বুঝি স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। গরুর মাংসে প্রচুর কোলেস্টেরল থাকায় অনেকেই সেটি খাওয়া এড়িয়ে চলেন। আবার কোরবানির ঈদে মাংস খাওয়া হয় বেশি, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়।
পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক যেমন আছে, তেমনি এই মাংস অনেক উপকারও করে থাকে। এই মাংসে যত পুষ্টিগুণ আছে, সেগুলো অন্য কোনো খাবার থেকে পাওয়া কঠিন। তবে খেতে হবে পরিমাণমতো।
মাংসের পরিমাণ
গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। মগজ ও কলিজায়, প্রোটিন থাকলেও সেটার পরিমাণ কম, বরং এর বেশির ভাগ জুড়ে রয়েছে কোলেস্টেরল। প্রতিদিনের প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে আপনার ওজনের ওপর। যদি সুস্থ থাকেন তাহলে প্রতিদিন তার ৫০ গ্রামের মতো প্রোটিন প্রয়োজন, তবে যদি তার কিডনি জটিলতা থাকে তাহলে তিনি প্রতিদিন ২৫ গ্রাম প্রোটিন খাবেন। মানে স্বাভাবিকের চেয়ে অর্ধেক।
আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালীন কিংবা গর্ভবতী অবস্থায় এই পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ তখন ১০০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন খেতে পারবেন। যাদের ওজন আদর্শ ওজনের চাইতে কম তাদেরও বেশি বেশি প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন।
তবে কারও প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত না। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২৬ গ্রাম প্রোটিন এবং ২ গ্রাম ফ্যাট থাকে। তার মানে প্রতিদিনের এই প্রোটিনের চাহিদা পূরণে কি আপনি ২৭০ গ্রাম মাংস খাবেন? একদমই না। কেননা দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা একটি খাবার নয়, বরং বিভিন্ন খাবার ও পানীয় দিয়ে আমরা পূরণ করে থাকি।
মাংস খাওয়ার উপকার
প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি গরুর মাংস শরীরের অন্যতম খনিজ উৎস হিসেবে কাজ করে। এতে রয়েছে জিংক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন ‘বি’ ইত্যাদি। এ সবই দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। চর্বিহীন মাংস খাওয়ার বেশ কিছু সুফল আছে। যেমন- টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে হাড়ে বল দেয়, ওজন ঠিক রাখে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়, বোধশক্তি বাড়ায় ইত্যাদি। অথচ চর্বির কারণে মাংসের এসব উপকার ব্যাহত হয়।
লাল মাংস খাওয়া সম্পর্কে সতর্কবাণীর প্রায় পুরোটাই বয়স্কদের জন্য। তবে যাদের বয়স ৩০-এর নিচে, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক আছে, মেদাধিক্য নেই এবং ওজনও স্বাভাবিক, তাদের জন্য লাল মাংসে অসুবিধা নেই। বেশি পরিমাণ আমিষ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে ইসবগুলের সরবত খাওয়া যেতে পারে। এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ ইসবগুল মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন। মনে রাখুন, ভিজিয়ে রাখলে ইসবগুলের উপকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।