গাজা আজো জ্বলছে -মিডল ইস্ট মনিটর
চলমান যুদ্ধে গাজায় ১ লাখ টন বিস্ফোরক নিক্ষেপ করেছে ইসরাইল। এতে অন্তত ২২০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এছাড়া ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও নিখোঁজ হয়েছে। শুক্রবার (৯ মে) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আনাদোলুর সূত্রে গণমাধ্যমটি জানায়, ১৯ মাস আগে গণহত্যা শুরুর পর থেকে ইসরাইল গাজায় ১ লাখ টন বিস্ফোরক ফেলেছে। এর মাধ্যমে ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা বা নিখোঁজ করেছে।
মিডিয়া অফিসের বিবৃতিতে ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে চলমান যুদ্ধের মূল পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ১০ হাজার এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
ইসরাইল ১২ হাজারের বেশি গণহত্যা চালিয়েছে, যার মধ্যে ১১ হাজার ৯২৬টি ছিল নির্দিষ্ট ফিলিস্তিনি পরিবারকে লক্ষ্য করে; এ হামলায় ২,২০০ পরিবার ও ৬,৩৫০ জন নাগরিক সম্পূর্ণভাবে নিবন্ধন তালিকা থেকে মুছে গেছে।
অভিযানে কবরস্থানও রেহাই পায়নি; ইসরাইলি বাহিনী গাজা থেকে ২,৩০০টি লাশ সরিয়ে নিয়েছে এবং সাতটি গণকবর স্থাপন করেছে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫২৯টি উদ্ধার করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সঙ্কটে জানানো হয়, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার ধ্বংসের ফলে গাজায় ২১ লাখের বেশি সংক্রামক রোগের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৭১ হাজার ৩৩৮টি হেপাটাইটিসের।
ধ্বংসযজ্ঞে ধর্মীয় ও মানবিক অবকাঠামোও আক্রান্ত হয়েছে; ইসরাইলি বাহিনী ৮২৮টি মসজিদ সম্পূর্ণ এবং ১৬৭টি আংশিক ধ্বংস করেছে, তিনটি গির্জায় হামলা চালিয়েছে এবং ৬০টি কবরস্থানের মধ্যে ১৯টি আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস করেছে।
অনাহারের কৌশল হিসেবে, ইসরাইল দুই মাস আগে সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করার পর ৬৬টি ত্রাণকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি খাদ্য রান্নাঘর ও ৩৭টি সাহায্য বিতরণকেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত। একইসাথে ৩৭ হাজার ৪০০টি ত্রাণ ও জ্বালানিবাহী ট্রাক আটকে দিয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনীর এই বর্বর আক্রমণে ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও মামলার মুখোমুখি।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর