ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যুদ্ধবিরতির পরেও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে একের পর এক লাশ উদ্ধার হচ্ছে, যা সেখানকার মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করছে। ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় গাজার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, আর প্রতিদিনই নতুন নতুন লাশের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা এখন ৪৮ হাজার ৩৭০ জনে পৌঁছেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন করে আহত আরও ১৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যা আহতের মোট সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ৭৮০ জনে নিয়ে গেছে। এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন এবং উদ্ধারকর্মীরা সবার কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এই চুক্তির আওতায় বন্দি বিনিময়, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির পরও নতুন নতুন লাশ উদ্ধারের ঘটনা এই সংকটের ভয়াবহতাকে আরও উন্মোচন করছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং অবকাঠামোর ৬০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের এই আক্রমণকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েল তার নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার সাধারণ মানুষ আজ চরম দুর্ভোগে রয়েছে, খাবার, ওষুধ, বাসস্থান এবং মৌলিক চাহিদার তীব্র সংকটে ভুগছে।
ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্দশা বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে। গাজার এই মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা এখন সময়ের দাবি। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি