ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ১৫ জন চিকিৎসা সহায়তাকারীকে হত্যা করার ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। মানবিক সহায়তাকারী কর্মীদের মৃত্যু ‘অসমর্থনযোগ্য’ উল্লেখ করে দেশটি বলেছে, যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। শনিবার (৫ এপ্রিল) নিউইয়র্ক টাইমস একটি ভিডিও প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
গত ২৩ মার্চ, গাজার দক্ষিণাঞ্চল টেল আল-সুলতান এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী এক হামলা চালায়, যেখানে ১৫ জন প্যারামেডিক ও উদ্ধারকর্মী নিহত হন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তখন দাবি করেছিল, ওই সময় কয়েকটি ‘সন্দেহজনক’ যানবাহন হেডলাইট ও সংকেত ছাড়া অগ্রসর হচ্ছিল, এবং সেগুলোর চলাচল পূর্বে সমন্বয় করা হয়নি—এজন্যই হামলা চালানো হয়। পরে জানানো হয়, হামলায় হামাস ও ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর নয়জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
তবে নিউইয়র্ক টাইমসের তদন্তে পাওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, নিহত একজন প্যারামেডিকের মোবাইল থেকে পাওয়া দৃশ্যে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, হামলার শিকার গাড়িগুলো চিকিৎসা ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ছিল। ওই ফুটেজের ভিত্তিতে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ৩০ মার্চ, রাফাহর কাছে এক অগভীর গণকবরে উদ্ধারকর্মীদের মরদেহ ও তাঁদের ব্যবহৃত গাড়ির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আটজন ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট চিকিৎসাকর্মী, ছয়জন গাজা সিভিল ডিফেন্স কর্মী এবং একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং বলেন, “বিশ্ব এখন একটি যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দেখতে চায়।” অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানায়, গাজায় মানবিক সহায়তাকারীদের হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এ ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত অপরিহার্য। তারা জোর দিয়ে বলেছে, দোষীদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় এখন পর্যন্ত ৫০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। মানবিক সহায়তাকারীদের এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড গাজার চলমান সংকটকে আরও গভীর করছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান বাড়িয়ে তুলছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
আপনার মতামত লিখুন :