“ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হওয়ায় কার্গো পরিবহনের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি সকল অংশীজনকে নি:স্বার্থভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রস্তুত করা হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট অপারেশনের জন্য। গত ১ এপ্রিল ভারত কর্তৃক বাংলাদেশের বিদ্যমান ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ ঘোষণা করায় দেশের অন্যান্য বিমান বন্দরের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও কার্গো ফ্লাইট অপারেশন এর যে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে তাকে পরিপূর্ণ ও সফলভাবে কাজে লাগাতে চায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ(বেবিচক)।
এরই অংশ হিসেবে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো: মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ব্যস্ত সময় কাটান। এসময় সিএএবি এর প্রধান প্রকৌশলী মো: জাকারিয়া হোসেন, বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এর কার্গো প্রতিনিধি, সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক শওকত, স্থানীয় সিএন্ডএফ এজেন্ট, বিমানবন্দর কাস্টমস প্রতিনিধি ও সিএএবি এর অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান সরেজমিনে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টারমিনাল ও কার্গো ওয়ারহাউস পরিদর্শন করেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান আসন্ন কার্গো ফ্লাইট অপারেশন সংক্রান্ত পূর্ব প্রস্তুতির অগ্রগতি, স্বতন্ত্র কার্গো ফ্লাইট অপারেশন হ্যান্ডলিং মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে রপ্তানি কার্গো একসেপ্টেন্স এরিয়া সম্প্রসারণ, একসেপ্টেন্স এরিয়ার জন্য নতুন প্রয়োজনীয় শেড নির্মাণ, একসেপ্টেন্স এরিয়ায় নতুন ওয়েয়িং মেশিন স্থাপন, অচল কোল্ড স্টোরেজ মেরামত, নতুন দুইটি ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন,প্রয়োজনীয় Walk Throw Metal Detector ক্রয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ও বিমানবন্দর পরিচালককে এ ব্যাপারে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। বিশেষ করে ইউরোপ এ সম্ভাব্য কার্গো রপ্তানির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় RA-3 Zone তৈরীর লক্ষ্যে জরুরি EDS Machine ক্রয়, RA-3 Zone তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় স্থান নির্ধারণ সহ অন্যান্য সিভিল, ই/এম ও সিএনএস ইঞ্জিনিয়ারিং কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করতে সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
এসময় বেবিচক চেয়ারম্যান সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধিদের মতামত ও দীর্ঘদিনের ব্যাগেজ রুল, কার্গো সংশ্লিষ্ট অসুবিধাগুলো শোনেন এবং এব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংক্ষিপ্ত সফরে সর্বশেষ তিনি বিমানবন্দরে চলমান নানা উন্নয়নমূলক কাজ ও যাত্রী টারমিনাল ভবন পরিদর্শন করেন।
এসময় বিমানবন্দর পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর বেবিচক চেয়ারম্যানকে বেশকিছু দিন যাবত অচল পড়ে থাকা ইন্টারন্যাশনাল এরাইভাল হলের স্কেলেটর পরিদর্শন করান এবং এর কারণে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। বেবিচক চেয়ারম্যান এব্যাপারে অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান প্রকৌশলী কে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান উপস্থিত সিএএবি এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্দেশ্যে জানান যে, "এ দেশটা আমাদের সবার। দেশের উন্নয়নে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সিভিল এভিয়েশন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ বিমান, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন সহ সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ হওয়ায় আমাদের জন্য কার্গো পরিবহনের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি সকল অংশীজনকে নি:স্বার্থভাবে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রতিটি বিমানবন্দর হবে যাত্রীবান্ধব। এক্ষেত্রে আমাদের সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার কোনো বিকল্প নাই।