গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে সংসদে আস্থা। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন বিষয়ে আগের প্রস্তাবগুলোতে একমত না হলে বিষয়টি সংসদের ওপরে ছেড়ে দেয়ার নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। তা না হলে ত্রয়োদশ সংশোধনী ফিরে যেতে চায় দলটি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং একজন ব্যক্তি জীবনে ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন— এই চারটি ছাড়া অন্যকোন বিষয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করতে চায় না বিএনপি।
এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন বিষয়ে আগের প্রস্তাবগুলোতে একমত না হলে বিষয়টি সংসদের ওপরে ছেড়ে দেয়ার নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। তা না হলে ত্রয়োদশ সংশোধনী ফিরে যেতে চায় দলটি।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনার সন্ধ্যা বিরতিকালে সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিবর্তনে গণভোটের প্রস্তাব করেছি, যাতে কেউ এ ব্যবস্থা খুব সহজে পরিবর্তন করতে না পারে। জুডিসিয়ারি সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে এবং ওয়াচডগ হিসেবে সেটা গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করবে। এছাড়া এক ব্যক্তি জীবনে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবে না। সব কিছু আইনে না রেখে কনস্টিটিউশনে (সংবিধান) নিয়ে এলে, সেটা তো সংবিধান আর থাকে না। হয়ে যাবে মহাভারত।’
‘বিএনপি চায় না সংবিধান ভারাক্রান্ত হোক’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবকিছু সংবিধানে নিলে সেটা আর সহজে সংশোধনযোগ্য থাকে না। বরং আইনগত কাঠামোর মধ্যেই এই স্ট্যাচুটরি ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব।’
সংসদে নারী আসন
সংসদে নারী আসনের ব্যাপারে এ সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ ঠিক থাকুক। এছাড়া আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো ৫ শতাংশ নারী প্রার্থীকে সরাসরি মনোনয়ন দিক এবং পরের নির্বাচনে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। ভবিষ্যতে সরাসরি নির্বাচনের সংখ্যা বাড়ানোর দিকে ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়া যাবে।’
‘নারীদের অংশগ্রহণ চাই, তবে সেটি যেন বাস্তব ও টেকসই হয়। সমাজের প্রস্তুতি ছাড়া ঢালাও সরাসরি নির্বাচন কার্যকর হবে না, মন্তব্য সালাহউদ্দিনের।
ন্যায়পাল
ন্যায়পাল নিয়ে বিএনপির অবস্থান বাস্তবভিত্তিক জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রথমে ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠিত হোক, কার্যকর হোক, তারপর স্থায়ী কাঠামো আসুক। এক্ষেত্রে ন্যায়পাল নিয়োগ নিশ্চিত করা, একটি পূর্ণাঙ্গ সেক্রেটারিয়েট গঠন, ন্যায়পাল আইনের পুনর্বিন্যাস ও ক্ষমতা নির্ধারণ, যাতে তার সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হয়।’
‘এত বড় তদন্তমুখী প্রতিষ্ঠান যদি কোনো রেজাল্ট দিতে না পারে, তাহলে সেটা জনগণের জন্য উপকারে আসে না,’ বলেন তিনি।
জুলাই সনদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমরা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেই খসড়ার সাথে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু ওখানে কিছু বাক্য, শব্দ গঠন, প্রণালী ইত্যাদি নিয়ে কারো কোন মতামত আছে কিনা সেজন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দিয়েছে। আমরা আমাদের যেগুলো সংশোধনী থাকবে ভাষাগত, বাক্যগত। অঙ্গীকারের বিষয়ে আমরা একমত। আমাদের যা যা সংশোধনী অবজারভেশন থাকবে এটা আমরা কালকে জমা দেব। কিন্তু যে দুই বছরের ভিতরে এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমরা একমত। যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি জন্য আইন কানুন সংবিধান চেঞ্জ করার জন্য ওখানে বলা হয়েছে। সেটার জন্যই তো এ কমিশন আসা।’
আপনার মতামত লিখুন :