জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে সহায়তা চেক হস্তান্তর করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাইন্ডেশন ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আয়োজিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ২০২৪-এর জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়।
এসময় ২৫ শহীদ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের হাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন লাখ টাকা ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকার চেক তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর মো. লুৎফর রহমান শহীদদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, অযৌক্তিক বিভিন্ন দাবি নিয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ানো ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিহত করার মনোবল ধারণ করতে হবে। এখনো আগের মতো ফ্যাসিস্টদের বাধার মুখোমুখি হতে আমরা যদি ভয় পাই, বিব্রত হই; তাহলে যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেই বাংলাদেশ আমরা প্রত্যাশা করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, এই রাষ্ট্র কাঠামো পরিচালনায় এখনো বিভিন্ন জায়গায় আমরা বিভিন্ন ব্যত্যয় দেখি। এর কারণটি হচ্ছে, যারা বিগত ১৬ বছরে সুবিধাভোগী ছিল, তারা এখনো বিভিন্ন চেহারায় হয় ঘাপটি মেরে আছে, না হয় গিরগিটির মতো নিজের রূপ পাল্টিয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমরা যখন বিভিন্ন সিস্টেমে রাষ্ট্র কাঠামোর যৌক্তিক দাবি নিয়ে যাই, এখনো তারা তাদের জায়গা থেকে বিভিন্ন ওজর ও অবহেলা দেখায়।
আরেক বিশেষ অতিথি জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান (স্নিগ্ধ) বলেন, জুলাইয়ের ৩৬টা দিন কেমন ছিল, শুধু উপস্থিত শহীদ পরিবারই তা জানে। যে মা শিশুকে জন্ম দিয়েছে, বড় করেছে, সেই সন্তানের মরা মুখ দেখার কষ্ট শুধু ওই মা বোঝেন। অন্য সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও শহীদ ও আহত পরিবারগুলো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। তাই রক্তের বিনিময়ে যারা সুন্দর বাংলাদেশ এনে দিয়েছে, নিজেদের জায়গা থেকে সেসব পরিবারের পাশে থাকুন।