মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প - সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের স্থলাভিষিক্ত কাউকে নিয়োগের চিন্তা করছেন। এমন খবর মার্কেটে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং ফেডের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপমূলক মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। এতে ডলারের দামে দরপতন ঘটেছে। ফলে ইউরো ও সুইস ফ্রাঙ্কের বিপরীতে মার্কিন ডলার বহু বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের স্থলাভিষিক্ত কাউকে নিয়োগের চিন্তা করছেন। এমন খবর মার্কেটে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং ফেডের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ইনটাচ ক্যাপিটাল মার্কেটসের এশিয়া এফএক্স প্রধান কিরান উইলিয়ামস বলেন, ‘যদি ট্রাম্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পাওয়েলের উত্তরসূরিকে আগেভাগে ঘোষণা করেন, তবে এটি মার্কেটকে হতাশ করবে। ফেডের স্বাধীনতা আর বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস পাবে, যা সুদের হারের প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং ডলারের মূল্যহ্রাস ত্বরান্বিত করবে।’
ডলারের এই দুর্বলতার সুযোগে ইউরো ০.৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১.১৭১০ ডলারে, যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। যদিও ১.১৬৯২-এর প্রতিরোধ মাত্রা ভেঙে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। পরে কিছুটা পিছিয়ে ১.১৬৮০-তে ফিরে আসে।
স্টার্লিং ০.৩ শতাংশ বেড়ে পৌঁছায় ১.৩৭২৩ ডলারে, যা ২০২২ সালের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। অন্যদিকে, ডলারের বিপরীতে সুইস ফ্রাঙ্কের মান বেড়ে দাঁড়ায় ০.৮০২৫৫, যা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন ডলার মান নির্দেশ করে।
ডলারের সূচকও (ডলার ইনডেক্স) নেমে আসে ২০২২ সালের শুরুর দিকের পর সর্বনিম্ন ৯৭.২৬৫-এ। ইয়েনের বিপরীতে ডলার ০.৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১৪৪.৫৭-এ।
এদিকে ট্রাম্পের অস্থির বাণিজ্য ও শুল্ক নীতিও মার্কেটের ওপর প্রভাব ফেলছে। ৯ জুলাইয়ের বাণিজ্য চুক্তির সময়সীমা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
জেপি মরগান এক সতর্কবার্তায় বলেছে, শুল্কের প্রভাব মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মন্থর করবে এবং মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে তুলবে। এতে মন্দার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে।
জেপি মরগান বলেছে, ‘আমরা মনে করছি, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যতিক্রমবাদের একটি পর্যায় শেষ হতে চলেছে।’ বিনিয়োগকারীদের জন্য ডলারের পতন এখন একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। কারণ বিশ্বজুড়ে ডলারের প্রাধান্য ও রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এর বিপরীতে ইউরো লাভবান হয়েছে। কারণ ইউরোপজুড়ে প্রতিরক্ষা ও অবকাঠামোতে বড় ধরনের বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে মহাদেশজুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।
সূত্র : রয়টার্স