দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় প্রবাসে কাটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রায় দুই হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং গুলশান অ্যাভিনিউয়ের বাসভবন পর্যন্ত পুরো পথটি নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। পুলিশের স্পেশাল এস্কর্ট ছাড়াও সাদা পোশাকে ও পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ (সিএসএফ) সমন্বিতভাবে এই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।
নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২৩ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকেই পুলিশের বিশেষ পাহারা শুরু হতে পারে। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত প্রতিটি থানা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নতুন করে চেকপোস্ট বসানো হবে। বর্তমানে গুলশান ও বারিধারা এলাকায় যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে তা আরও জোরদার করা হচ্ছে। বিশেষ করে তাঁর বাসভবন ও আশপাশের এলাকায় প্রতিদিন দেড় শতাধিক পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে এই বিষয়ে বৈঠক হয়েছে এবং সোমবার চূড়ান্ত নিরাপত্তা নির্দেশনা আসার কথা রয়েছে।
তারেক রহমানের আবাসন নিয়েও চলছে বিশেষ প্রস্তুতি। গুলশান অ্যাভিনিউয়ের তাঁর নিজস্ব বাড়িটি বর্তমানে মেরামতের কাজ চলছে। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই বাড়িটি পুরোপুরি প্রস্তুত না হয়, তবে তিনি তাঁর মা খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’তে উঠতে পারেন। খালেদা জিয়া বর্তমানে ভিভিআইপি নিরাপত্তা ও এসএসএফ সুবিধা পাচ্ছেন, ফলে তারেক রহমান সেখানে অবস্থান করলে এসএসএফ, সিএসএফ এবং পুলিশের একটি শক্তিশালী সমন্বিত নিরাপত্তা বলয় তৈরি হবে। তাঁর কার্যালয় এবং চলাচলের পথ ঘিরে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
বিএনপি ও কূটনৈতিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তারেক রহমান ট্রাভেল পাস পেয়েছেন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটে তাঁর টিকিট বুক করা হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে তাঁর বহনকারী বিমানটি ঢাকায় অবতরণের কথা রয়েছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারা বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন পর্যন্ত শৃঙ্খলা রক্ষা ও অভ্যর্থনার বিষয়টি সমন্বয় করছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের আগমনকে ঘিরে যেমন রাজনৈতিক উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তেমনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা ঝুঁকি এড়াতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।