রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাটুপাড়া কারিগরি ও বাণিজ্যিক ইনস্টিটিউটের ‘ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং’ ট্রেড এক শিক্ষক এক ছাত্রীকে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী (২৪) এমন অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মাসুদ সরকার (৪৭)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী বলেন, ‘২০১৯ জানুয়ারিতে ওই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীতে ভর্তি হই। শিক্ষক মাসুদের বাড়ির পাশেই বাবার বাড়ি। তাই আমার পরিবারের সঙ্গে মাসুদের সখ্যতা পুরনো। আমি সেখানে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষক মাসুদ প্রায়ই বাড়িতে আসতো। ২০১৯ সালের ১০ মে দুপুর আড়াইটার দিকে আমাকে নোট দিবেন বলে মোবাইলে কল দিয়ে তার বাসায় আসতে বলেন।
শিক্ষক চাচার ফোন কল পেয়ে আমি তার বাড়িতে যাই। তিনি বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমাকে দেখে বলেন, দোতলায় তার শোবার ঘরে নোটগুলো রাখা আছে, নিয়ে আসতে। দোতলায় শোবার ঘরে গেলে কৌশলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমাকে ধর্ষণ করে। আগে থেকে মোবাইল ফোন রেখে ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে।’
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রী আরও বলেন, এরপর থেকে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নানা জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এভাবে দিনের পর দিন ধর্ষণের ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মো. মাসুদ সরকারকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ম্যাসেজ পাঠানো হলেও কোনো সাড়া দেননি। মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একদিন ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ দিতে থানায় এসেছিলেন। এসে যৌন নির্যাতনের তিন বছরের ইতিহাস তুলে ধরে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্য তাকে আদালতে মামলা করতে বলেছি।’
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানওয়ার হোসেন বলেন, ‘ওই ছাত্রী আমার কাছে এসেছিলো। দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেইলিং করে ধর্ষণ করা হয়েছে-এমন বেশ কিছু অডিও রেকর্ড ও ছবি সরবরাহ করে। এটা ক্রিমিনাল কেইস, তাকে থানায় কিংবা আদালতে মামলা করতে বলি।’
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা-মা, ছোট ভাই ও ভগ্নিপতি উপস্থিত ছিলেন।