গত তিন মাসে মানুষের যে আশা প্রত্যাশা ছিল তা খুব একটা পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদ, এমপি, প্রধান বিচারপতি, বায়তুল মোকাররমের প্রধান খতিব পালিয়ে যাওয়ার পর এ দেশে যে শূন্যতা তৈরি হয় তার প্রেক্ষিতে ৮ আগস্ট ড. ইউনুস তার কিছু সঙ্গীকে নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন। সেই সরকারই ৮ নভেম্বর তিন মাস অতিক্রম করল। মানুষের প্রত্যাশা, স্বপ্ন ও আশা ছিল; তার ভেতর সবচেয়ে বড় জিনিসটি হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ দুমুঠো খেয়েপরে বেঁচে থাকবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সময় যে সিন্ডিকেট হয়েছিল সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে কিন্তু এগুলো হয়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা শহরে নিজ বাসভবনে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করেছিল যে তারা ভোটাধিকার ফিরে পাবে। তারা নিজেদের অধিকারের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। কিন্তু সেই নির্বাচন এখনো পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি বা বিএনপি দাবি করেছিল রোডমার্চ এবং যৌক্তিক একটি সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেটিও সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত সরকার উদ্যোগী হয়েছে ও নির্বাচন দেবে বলেছে কিন্তু সুনির্দিষ্ট তারিখ-মাস ঘোষণা করেনি। সেটি ঘোষণা করলে আগামী দিনে দেশের মানুষ আরও উৎফুল্ল হবে, আরও সফল হবে। যতক্ষণ ঘোষণা না করছে ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ একটু উদগ্রীব বা হতাশই থাকলো।
‘প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন’ চট্টগ্রামে এবি পার্টির এক নেতার দেওয়া এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান দুদু বলেন, বাংলাদেশে বিএনপির কোনো নির্বাচনে প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তারা ১৬ থেকে ১৮ বছর ধরেই প্রস্তুত। যেকোনো মুহূর্তেই নির্বাচন দিলে যেকোনো সিটে একাধিক প্রার্থী তাদের। সে কারণে বিএনপির প্রস্তুতি খুব কম সময়ের ভেতরেই সম্ভব।
আগামী নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে অংশগ্রহণ করবেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমি চুয়াডাঙ্গার মানুষ, চুয়াডাঙ্গায় একাধিকবার সংসদ সদস্য ছিলাম। বিএনপির জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত জীবিত সাবেক সংসদ সদস্য একমাত্র আমিই বেঁচে আছি। আমি শুধু চুয়াডাঙ্গার মানুষ হিসেবে এখানে সংসদ সদস্য ছিলাম কিন্তু আমার ক্ষেত্রটা জাতীয় ভিত্তিক। আমি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও একসময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। কেন্দ্রীয় কৃষক দলের দীর্ঘকালীন সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক ছিলাম। সারা দেশেই আমার ক্ষেত্র। কিন্তু নির্দিষ্ট এলাকার মানুষ হিসেবে এখানে ভালোমন্দের সঙ্গে সব সময় সম্পৃক্ত ছিলাম, এখনো আছি।
তিনি আরও বলেন, দল যখন যেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় আমি তার প্রতি যেকোনো ব্যাপারে অর্থাৎ আন্দোলন, সংস্কার ও নির্বাচনের ব্যাপারে সেটিকে আমি গ্রহণ করি এবং সেই মোতাবেক চলি। আগামী দিনেও চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এই অঞ্চল সব হচ্ছে বিএনপি অধ্যুষিত অঞ্চল। এখানে যদি মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে বিএনপি জয় লাভ করবে এবং আমার দৃঢ় বিশ্বাস আগামীতেও তাই হবে।
আপনার মতামত লিখুন :