দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় জামায়াতের যে প্রতিক্রিয়া


Sarsa Barta প্রকাশের সময় : জুন ২৫, ২০২৫, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ /
দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় জামায়াতের যে প্রতিক্রিয়া

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এই দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ে আমাদের অধিকার কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক এবং আইনী ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য এই আইনী লড়াই আমাদের দেশের বরেণ্য আইনজীবীরা সহযোগিতা করেছেন; গণমাধ্যমের কর্মীরা সহযোগিতা করেরেছন। ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করে জাতির সামনে আপনারা বিবেককে কাজে লাগিয়ে সাংবাদিকতার পেশার মহত্ত্বকে আপনারা তুলে ধরেছেন এবং বহাল রেখেছেন সেজন্য আপনাদের সকলকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে দিয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত (স্মারক নম্বর-১৭,০০,০০০০,০২৫.৫০.০৫৮.০৮-১৫৪) প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়।

এর আগে গত ১ জুন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক সর্বসম্মত রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’সহ নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়ার আদেশ প্রদান করেন। গত ৪ জুন নির্বাচন কমিশন আপিল বিভাগের রায়ের প্রেক্ষিতে দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’র সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফেরত দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং আজ ২৪ জুন প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করে।

প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার খাস মেহেরবাণীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’সহ নিবন্ধন আদালতের রায়ের সূত্রে আজকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আমরা অফিসিয়ালি ফিরে পেলাম। এজন্য মহান রব আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রাণ খুলে তৃপ্তির সাথে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাত পৌণে ৮টার দিকে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংটি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন-

“সাংবাদিক বন্ধুগণ,

আপনারা সমাজের সচেতন, বিবেকবান মানুষ। আপনাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের চিন্তা-চেতনা, মন-মানসিকতা, রাজনীতিকরণ, ভোটাধিকারসহ সবকিছুর অভিব্যক্তি ও আকাঙ্ক্ষা জাতির কাছে দেশ-বিদেশে প্রতিফলিত হয়। এজন্য আপনাদেরকে বলা হয় জাতির বিবেক। কীভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মত একটি গণতান্ত্রিক নিয়মতান্ত্রিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের উপর পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার জুলুম চালিয়েছিল, আমাদের অধিকারগুলো কীভাবে কেড়ে নিয়েছিলো সব ইতিহাস দেশবাসীর জানা আছে। আপনাদেরকে জানাতে চাই, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের নিবন্ধন আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে বৈধভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধিত হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে আমাদের এই অধিকারকে কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। ২০০৯ সালের একটি রিট পিটিশনের সূত্র ধরে ২০১৮ সালে আদালতের এক আদেশে আমাদের নিবন্ধন বাতিল করেছিলো।

তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘ আইনী লড়াই-সংগ্রাম করেছি। অবশেষে আপনারা জানেন চলতি মাসের ১ জুন ২০২৫ তারিখে হাইকোর্টের সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমরা আমাদের সেই অধিকারকে ন্যায্যভাবে ফিরে পেয়েছি এবং সেই আদেশের ভিত্তিতে আজ নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আমাদের সেই নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ ফেরত প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ফেরত দেয়া হল।

সম্মানিত সাংবাদিক বন্ধুগণ,

এই দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ে আমাদের অধিকার কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক এবং আইনী ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য এই আইনী লড়াই আমাদের দেশের বরেণ্য আইনজীবীরা সহযোগিতা করেছেন; গণমাধ্যমের কর্মীরা সহযোগিতা করেরেছন। ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করে জাতির সামনে আপনারা বিবেককে কাজে লাগিয়ে সাংবাদিকতার পেশার মহত্ত্বকে আপনারা তুলে ধরেছেন এবং বহাল রেখেছেন সেজন্য আপনাদের সকলকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আমি আবারও সর্বোপরি মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে বার বার শুকরিয়া আদায় করছি। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আমাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য দোয়া করেছেন, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশে বিদেশে সকল সুধী, শুভাকাঙ্খী, প্রবাসী এবং দেশী সকল মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ”