রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় কিশোর প্রেমিকের বাড়িতে দুই সন্তানের জননীর অনশন ভাঙাতে কেউ এগিয়ে আসেনি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কিশোর প্রেমিকের (১৭) বাড়িতে অনশনরত অবস্থায় বসে থাকতে দেখা গেছে দুই সন্তানের জননী প্রেমিকাকে (২৪)। বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে আসার পর সে কিশোর বাড়ি থেকে পালিয়েছে।
ঘটনাটি বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদিপুর পন্ডিতপাড়া গ্রামে। তিন দিন ধরে এ অনশন চলছে। স্থানীয়রা জানান, পরিচিত হওয়ার সুবাদে ফোনে কথা বলা শুরু হয়। সেই ফোনালাপের সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। এরপর শরীরিক সম্পর্কে।
এখন বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন সেই প্রেমিকা। বিপত্তি বাঁধে প্রেমিকের বয়সে, কিশোর প্রেমিক এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আর প্রেমিকা বিবাহিত নারী এবং দুই সন্তানের জননী! তার ছয় ও দুই বছর বয়সী দুটি মেয়ে রয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে স্বামী-সন্তান রেখে কিশোর প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন ওই গৃহবধূ। তবে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে কিশোর। অনশনরত গৃহবধূ এবং প্রেমিক কিশোরের অসুস্থ মা ও বোন ছাড়া কেউ এখন ওই বাড়িতে নেই।
স্থানীয়রা আরো জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টায় বিয়ের দাবি নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রেমিকের বাড়িতে যান ওই গৃহবধূ। কিন্তু সেখানে তাকে না পেয়ে তার বাড়িতেই অবস্থান নেন। তাদের দু’জনের বাড়ি একই এলাকায়।
ওই গৃহবধূ সাংবাদিকদের বলেন, পরিচয়ের সূত্র ধরে গত রমজান মাস থেকে ওই কিশোরের সাথে তার ফোনে কথা বলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
ইমোতে কথা বলার কোনো এক সময় আপত্তিকর কিছু ছবি ওঠানো হয়। পরে ওই ছবি দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ওই কিশোর। সেই ছবির ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়।
পরে কিশোরের কথামতো তার দেয়া ঘুমের ওষুধ স্বামীকে খাইয়ে রাতে প্রেমিকের বাড়িতে যান ওই গৃহবধূ। সেই রাতে তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। সেই থেকে বিয়ে ও মেয়েদের দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাসে এ সম্পর্ক চলছিল।
এদিকে, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই গৃহবধূকে আর গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন তার স্বামী। পলাতক ওই কিশোর প্রেমিকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি জানার পর চেয়ারম্যানকে এবং থানাকে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ এসে স্থানীয়ভাবে সমাঝোতার কথা বলে চলে গেছে।
বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি শোনার পর সেখানে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি গিয়েছিলেন। ওই গৃহবধূকে ছেলের বাড়ির লোকদের জিম্মায় রেখে এসেছেন এবং তাদের ছেলেকে হাজির করতে বলে এসেছেন। সে এলে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি জানার পরে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।