দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হতে এসেছেন। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় জাজিরা টোলপ্লাজা থেকে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন। মাঝিকান্দি ঘাটে একটি ফেরি চালু থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে মোটরসাইকেল পার হচ্ছে। তবে কেউ কেউ টোলপ্লাজা থেকে ৫০০-৭০০ টাকা ভাড়া দিয়ে পিকআপে করে ঢেকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাচ্ছেন।
জানা যায়, সকাল থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা টোলপ্লাজায় যানবাহনের চাপ শুরু হয়। তবে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ ঘোষণায় টোলপ্লাজা এলাকায় যানজট ছিল না। সকাল থেকেই টোলপ্লাজা এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকে গণপরিবহন পারাপারের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য পরের দিন থেকে কঠোর অবস্থান নেয় প্রশাসন। সেতু পারাপারের জন্য বেঁধে দেওয়া হয় বিধিনিষেধ। এদিকে, বাংলাবাজার ফেরি ঘাট গত এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
খুলনা থেকে আসা শিহাব বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলো এতে আমরা খুবই খুশি। কিন্তু মোটরসাইকেল নিয়ে যদি না যেতে পারি তাহলে আমাদের দুর্ভোগ আর কাটলো কই। বিষয়টি সরকারের দেখা উচিত।’
গৌরনদী থেকে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু জাজিরা টোলপ্লাজায় পুলিশ মোটরসাইকেল ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই কোনো উপায় না পেয়ে ফেরিতে পার হতে মাঝিকান্দি ঘাটে এসেছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও ফেরি না পেয়ে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছি।’
ফরিদপুরের মনির হোসেন বলেন, ‘কিছু খারাপ মানুষের জন্য আমাদের সবাইকে শাস্তি দেওয়া ঠিক না। আমরা চাই কঠোর নজরদারির মধ্যে দিয়ে হলেও আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পারাপারের যেন সুযোগ করে দেওয়া হয়।’
মাদারীপুরের শাহিন মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ, তাই বাধ্য হয়ে ৫-৭ শ টাকা করে দিয়ে কয়েকজন মিলে একটি পিকআপ ভাড়া করে পদ্মা সেতু পার হচ্ছি। সেতুতে প্রশাসনের টহল জোরদার করে মোটরসাইকেল পারাপারের দাবি জানাচ্ছি।’
শিবচর হাইওয়ে থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যেসব যানবাহনের রুট পারমিটসহ সব বৈধ কাগজপত্র রয়েছে, আমরা তাদের সেতু পারাপারের জন্য ছেড়ে দিচ্ছি। যেসব গাড়ির রুট পারমিট নেই, তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষ করে মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে বিক্রির উদ্দেশ্যে শোরুমের গাড়ি অন্যকোনো পিকআপে বা ট্রাকে আনা হলে তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চলাচলকারী কোনো মোটরসাইকেলকে পদ্মা সেতু পারাপার হতে দেওয়া হচ্ছে না। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ থাকবে।’