ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ভাগিনী ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক কার্যত আত্মসমর্পণ করেছেন। ফ্ল্যাটকা-ে অভিযোগের ঘটনায় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টার কাছে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সিটি মন্ত্রী ও আর্থিক খাতে দুর্নীতি মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।
লন্ডনে দু’টি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তিনি এ আহ্বান জানান। কারো কারো মতÑ এই আহ্বান জানানোর মাধ্যমে কার্যত ‘আত্মসমর্পণ’ করলেন টিউলিপ। গত সোমবার ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট টিউলিপের আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ খবর দিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ। বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে টিউলিপসহ তার ভাই ও মায়ের অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র বলছে, লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তি ব্যবহারকে ঘিরে অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রীদের স্বার্থ সম্পর্কিত স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে রেফার করেছেন।
চলতি সপ্তাহে টিউলিপের চীনে যাওয়া জন্য ট্রেজারি প্রতিনিধি দলে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করার কারণে তাকে ব্রিটেনেই থাকতে হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন উপদেষ্টাকে সহায়তা করার জন্য তাকে প্রয়োজন হবে। প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রিত্বমূলক কোড কার্যকর করার পরামর্শ দেন এমন একজন স্যার লরি ম্যাগনাস এখন লন্ডনে টিউলিপের বিরুদ্ধে দু’টি ফ্ল্যাট ব্যবহারের দাবিগুলো খতিয়ে দেখবেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি পরিষ্কার, আমি কোনো ভুল করিনি’। এ নিয়ে স্যার লরি ম্যাগনাসকে একটি চিঠিও লিখেছেন টিউলিপ। সেখানে তিনি লিখেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমি গণমাধ্যমের খবরের বিষয় হয়েছি। আমার আর্থিক বিষয় এবং আমার পরিবারের সঙ্গে আগের সরকারের সম্পর্কের তথ্যগুলোর বেশিরভাগই ভুল। আমি পরিষ্কার যে, আমি কিছু ভুল করিনি। যাইহোক, সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই আপনি স্বাধীনভাবে এই বিষয়গুলো তদন্ত করুন।
টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবার সেন্ট্রাল লন্ডনে অ্যাপার্টমেন্টটি কীভাবে অধিগ্রহণ করেছেন, তা খতিয়ে দেখার জন্য টোরি এমপিরা স্যার লরিকে আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে টিউলিপের পদত্যাগও দাবি করেছেন তারা।
এদিকে রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত বাংলাদেশের রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ পাইয়ে দিতে তার বিরুদ্ধে ৪ বিলিয়ন ডলার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। টিউলিপ, তার ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মা শেখ রেহানার অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে দেশের সবগুলো ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।
এর আগে, বিএফআইইউ শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেরও তথ্য চেয়েছিল। চিঠিতে তাদের লেনদেনের রেকর্ড, অ্যাকাউন্ট খোলার ফর্ম এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যসহ সব ধরনের তথ্য দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :